নে দুপুরে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকার আশিয়ান গ্রুপের প্রকল্প দখলে এসে নিহত হয়েছেন একজন। এসময় আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১০জন।
সোমবার খিলক্ষেতে জমি-জমা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম কাউসার দেওয়ান (৪২)। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে খিলক্ষেতের বরুয়া এলাকায় স্বদেশ প্রপার্টি ও আশিয়ান সিটির সিকিউটি গার্ডদের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার আশিয়ান সিটির এক কর্মচারি এবিষয়ে লিখিত অভিযোগে স্থানীয় থানা পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পকে জানিয়েছে, সন্ত্রাসী হাতে দেশী, বিদেশী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ব্যাটারীচালিত অটোরিকসা এবং মোটরসাইকেল যোগে আমাদের প্রকল্পের পূর্বদিক থেকে প্রবেশ করে অতর্কিত আমাদের অফিসে এবং আমাদের প্রকল্প এলাকায় কর্মরত কর্মকর্তাদের উপর দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল দিয়ে উপর্যুপুরি হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে।
আসামী মোবারক তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে অফিসে অবস্থানরত আমাদের কোম্পানীতে মালামাল সরবরাহকারী ফাহিম ভূঁইয়া, পিতা-আহাদ আলী ভূঁইয়া এবং আমাদের কর্মচারী জিহাদকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে সরাসরি চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। ফাহিম ভূঁইয়া এবং জিহাদ মারাত্মকভাবে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এতে ফাহিম ভূঁইয়ার বাম চোখের নিচে এবং শরীরের অনেক জায়গায় মারাত্মক জখমপ্রাপ্ত হন। এছাড়া আসামীদের আঘাতে আমাদের প্রায় ৭/৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হয়।
আহত ফাহিম ভূঁইয়া এবং জিহাদ কে প্রথমে আশিয়ান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার সময় অবস্থার অবনতি হলে এম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। আসামীরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে স্বপ্নসিঁড়ি অফিসে ব্যাপকভাবে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আসামীরা চলে যাওয়ার সময় আমাদের স্বপ্নসিঁড়ি অফিসের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রকল্পের নকশা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র নিয়ে যায়। এতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রাণভয়ে পার্শ্ববর্তী আমাদের কোম্পানীর কারখানায় আশ্রয় নেয়।
আমি সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে খিলক্ষেত থানায় এবং দক্ষিন থানাকে এবং আমাদের কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি এবং সাহায্য প্রার্থনা করি। পরবর্তীতে আমাদের প্রকল্পে কর্মরত নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন সাখাওয়াত (অবঃ) স্থানীয় সেনাবাহিনী ক্যাম্পে সাহায্য প্রার্থনা করে একখানা আবেদন করেন।
বর্তমানে আমরা অনিরাপদ জীবনযাপন করছি এবং আতংকের মধ্যে অবস্থান করছি। যেকোন সময় আসামী এম.এ কাইয়ুম, মোবারকগং পুনরায় আমাদের উপর হামলা করে আমাদের জানমালের ক্ষতিসাধন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। এখনও তারা দলবলসহ খিলক্ষেত থানাধীন বরুয়া উত্তর পাড়া এলাকায় অবস্থান করছেন।
এই দখল প্রক্রিয়ায় অভিযুক্তরা হলেন, এম. এ কাইয়ুম, মাতা-রাবেয়া আক্তার, পিতা-এম.এ হাই ও মোবারক হোসেন দেওয়ান (৫৪), পিতা-মমতাজ উদ্দিন দেওয়ান, মাতা-সাহাতুন নেছা, সাং-বরুয়া দেওয়ান পাড়া।
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ন’টা দশটা নাগাদ অন্তত ৩ থেকে ৪ শ’ লোকের একটি দল প্রকল্পে প্রবেশ করলে সংঘর্ষ বাঁধে। যেখানেএকাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়।
খিলক্ষেত থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম নিহতের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। নিহতের মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতালে রয়েছে।
ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে পুলিশ সদস্যরা রয়েছে। নিহতের মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডেক্যাল কলেহ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
নিহতের পরিবার জানায় নিহত কাউসার আশিয়ান সিটির দখলে থাকা পৈত্রিক সম্পদ উদ্ধারে গিয়েছিলো।
আশিয়ানের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, চাঁদা না পেয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে কাইয়ুম কমিশনারের সন্ত্রাসীরা।
পুলিশ জানায়, জায়গা-জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।