বিজ্ঞানীদের একটি দল সাইবেরিয়ার পূর্বাঞ্চলের গলতে থাকা পারমাফ্রস্টে প্রায় নিখুঁতভাবে ৫০ হাজার বছর ধরে সংরক্ষিত একটি শিশু ম্যামথের সন্ধান পেয়েছেন।
রাশিয়ার ওই অঞ্চল থেকে শিরোনামে উঠে আসা আবিষ্কারের মধ্যে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বশেষ। পৃথিবীর নানা অঞ্চলে ছোট-বড় গর্ত বা গহ্বর রয়েছে, যেগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম ‘পারমাফ্রস্ট’।
পূর্ব সাইবেরিয়ার ইয়াকুটস্ক শহরের ‘নর্থ-ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটি বা এনইএফইউ’-এর ‘লাজারেভ ম্যামথ মিউজিয়াম ল্যাবরেটরি’র রেক্টর আনাতোলি নিকোলায়েভ বলেছেন, এ ম্যামথটি ‘গবেষণার এক অনন্য আবিষ্কার’, যেখানে এর এমন ব্যতিক্রমী সংরক্ষণে অবাক হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ মৃতদেহটির মাথা, শুড়, কান ও মুখের অংশে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
গত সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনইএফইউ-এর বিজ্ঞানীরা বলেছেন, নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে ভালোভাবে সংরক্ষিত প্রাণী ইয়ানা নামের এই ম্যামথটি। রাশিয়ার ‘বাতাগাইকা’ গর্ত থেকে এ দেহাবশেষ উদ্ধার করেছেন তারা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ৮০ মিটার প্রশস্ত এক গভীর গর্তে পরিণত হয়েছে এটি।
লাজারেভ ম্যামথ মিউজিয়াম ল্যাবরেটরি’র প্রধান ম্যাক্সিম চেরপাসভ বলেছেন, ১১০ কেজি ওজনের এই মৃতদেহটিকে তুলে আনা হয়েছে এক উন্নত স্ট্রেচারে করে। মৃত্যুর সময় ম্যামথটির বয়স ছিল সম্ভবত এক বছরের একটু বেশি। তবে পরীক্ষার মাধ্যমে এর বয়স সম্পর্কে আরও সঠিকভাবে জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। দেহাবশেষটির মাথা ও মেরুদণ্ডের অংশ এখনও টিকে থাকার বিষয়টি অস্বাভাবিক।
নিয়ম অনুসারে, দেহের যে অংশটি প্রথমে গলে যায় বিশেষ করে মেরুদণ্ডের অংশটি প্রায়ই আধুনিককালের শিকারী বা পাখিরা খেয়ে ফেলে, বলেছেন চেরপাসভ। যেমন– মৃতদেহটির সামনের বিভিন্ন অঙ্গ এরইমধ্যে কেউ খেয়ে ফেলেছে। তবে মাথাটি এখনও বেশ ভালভাবে টিকে আছে।
গত মাসে ‘সাখা বা ইয়াকুতিয়া’ নামে পরিচিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই একই অঞ্চলে ৩২ হাজার বছরের পুরনো একটি ছোট আকারের স্যাবর-দাঁতওয়ালা বিড়াল শাবকের দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ বছরের শুরুর দিকে ৪৪ হাজার বছরের পুরনো একটি নেকড়ের মৃতদেহও আবিষ্কৃত হয়েছে ওই অঞ্চলে।
আ. দৈ/ সাম্য