বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গোলাবর্ষণকারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ফেনী থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।
তিনি বলেন, রোববার ফেনী সদরের সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিদেশি পিস্তল দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়েছিলেন মিঠুন। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও স্তিলটি উদ্ধার করতে পারেননি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মিঠুন চক্রবর্তী চকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি। তিনি পাঁচলাইশ মডেল থানার কাতালগঞ্জ ও চকবাজার এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ, সরকারি জমির দখলদার, টেন্ডারবাজ ও চকবাজার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর সহযোগী।
সংবাদ সম্মেলনে রইছ উদ্দিন বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে পাঁচলাইশ ষোলোশহর ২ নং গেট এলাকার সাধারণ ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোলাবর্ষণ শুরু করেন মিঠুন চক্রবর্তী।
আন্দোলনের সময় নিজে সরাসরি পিস্তল দ্বারা ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছেন এমন একটি ভিডিও ও বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ছবি দেখে আমরা তাকে শনাক্ত করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অস্ত্র হাতে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এর পর থেকে তিনি একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করেন।
আমাদের পাঁচলাইশ থানার একটি আভিযানিক দল দীর্ঘদিন তাকে গ্রেপ্তারের করার চেষ্টা করে আসছিল। সর্বশেষ ফেনীর সুলতানপুর তার দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘মিঠুন পাঁচলাইশ থানার একটি মামলায় এজাহারনামীয় আসামি। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছে সেখানেও আমরা তার সম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
উপ-পুলিশ কমিশনার রইছ বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিঠুন আমাদের কাছে স্বীকার করেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমানোর জন্য তিনি অস্ত্র দিয়ে নিজে আক্রমণ করেছেন। আন্দোলনে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি একেক সময়ে একেক তথ্য দিচ্ছেন। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। অতি শীঘ্রই অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য আমরা অভিযান পরিচালনা করব।
অনেক রাজনৈতিক নেতা এসব অস্ত্রধারী ও হামলাকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এই প্রশ্নের জবাবে উপ-পুলিশ কমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা করেছে, গুলি করেছে তাদের আশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা অপরাধী, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদের যারা আশ্রয় প্রশয় দেবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আ. দৈ/ আফরোজা