রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর তাদের শাস্তির আওতায় না এনে জামিন দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রুয়েট প্রশাসন। এ নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হলে পুলিশ প্রশাসনকে এর দায়ভার নিতে হবে বলে জানিয়েছেন রুয়েট উপাচার্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
রুয়েটের ছাত্র-কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, ১৬ ডিসেম্বর নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকার হজোর মোড়ে রকি ও শুভ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার যান। কেনাকাটা শেষে ৫০০ টাকার নোট দিলে দোকানদার শাহাবুদ্দিন জানান তার কাছে খুচরা নেই। তখন শিক্ষার্থীরা আরও জিনিস কিনে টাকাটা ভাংতি করতে বলেন। দোকানদার এতে বাজে আচরণ করেন তাদের সঙ্গে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে দোকানদার তাদের গায়ে হাত তোলেন। সেখানে শিক্ষার্থী শুভর মাথায় স্থানীয় একজন বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। রকিকেও মারধর করা হয়। পরে তারা তাদের ব্যাচের অন্যদের ফোনে খবর দেন।
এদিকে স্থানীয় কিছু মানুষ দফায় দফায় রুয়েটের ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এতে রুয়েটের ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়। এর মধ্যে ছয় জনের অবস্থা গুরুতর। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরাও উপস্থিত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদও রয়েছেন। রুয়েট শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনা চন্দ্রিমা থানায় রুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মামলা করার পর দুজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু আসামিদের বিচারের জন্য কারাগারে না পাঠিয়ে গতকাল বুধবার জামিন দেওয়া হয়। ফলে রুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এবং রুয়েট প্রশাসন ও শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, রুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে আহত করার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। রুয়েটের পক্ষ থেকে এই হামলার ঘটনায় মামলার হয়। মাত্র দুজনকে গ্রেফতার করার পরেও তাদের শাস্তির আওতায় না এনে জামিন দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।
উপাচার্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই হামলার ঘটনায় আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় না আনা হলে পরবর্তীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হলে পুলিশ প্রশাসনকে এর দায়ভার নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিউর রহমান বলেন, হামলার ঘটনায় শাহাবুদ্দিন ও জুয়েল নামক দুজনকে গ্রেফতার করে থানায় এক দিন রেখে জেলখানায় পাঠানো হয়। আমরা গ্রেফতার করে আদালতে দিয়েছি, বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালত জামিন দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী শহরের পদ্মা আবাসিক এলাকায় স্থানীয় দোকানদারের সঙ্গে রুয়েট শিক্ষার্থীর কথাকাটাকাটির পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন রুয়েট শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে ৬ জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাদের মধ্যে শাহাবুদ্দিন ও জুয়েল দুজনকে গ্রেফতার করে।
আ. দৈ/ আফরোজা