বাংলাদেশ এখন মাথাপিছু আয় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ২,৬২১ ডলারে পৌঁছেছে। এটি ভারত (২,৬১২ ডলার) এবং পাকিস্তানের (১,৪৭১ ডলার) চেয়ে বেশি।
দুই দশক আগেও মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। তবে ধীরে ধীরে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পোশাকশিল্পের সাফল্য, রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশ এই চিত্র পাল্টে দিয়েছে। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু জিডিপিতে বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। একইভাবে, ২০১৬ সালে পাকিস্তানকেও পেছনে ফেলে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মহামারী ও অর্থনৈতিক মন্দার চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। করোনার সময়েও রপ্তানি শিল্প এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের কার্যক্রম শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল।
বাংলাদেশের এই সাফল্যের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প, বিশেষ করে পোশাকশিল্প, অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়েছে। তৃতীয়ত, নারীর অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করেছে।
অন্যদিকে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের ফলে দেশের মানবসম্পদের মান উন্নত হয়েছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরো ত্বরান্বিত করেছে।
তবে, অর্থনীতির এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে বাংলাদেশকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান নীতিমালার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা গেলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরও সুসংহত হবে।
আ. দৈ/ আফরোজা