দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক ) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, জনগণ এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছে। তিনি বলেন, 'একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাবেন, একটা দেশের সুপ্রিম কোর্টের চিফ জাস্টিস পালিয়ে যাবেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর এমনকি বাইতুল মোকাররমের খতিব ও পালিয়ে যাবেন, এরকম ঘটনা তো ঘটে না।'
আজ সোমবার (১১ আগস্ট ) জয়পুরহাট জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুদকের ১৮০ তম গণশুনানি অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এছাড়া দুদকেরে মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো: আক্তার হোসেন ও জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত গণশুনানিতে জনসাধারণের সমাগমকল্পে জয়পুরহাট সদরের বিভিন্ন এলাকায় সপ্তাহব্যাপী মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, বুথ স্থাপন করে অভিযোগ সংগ্রহ, অভিযোগ বাক্স স্থাপনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুদকের পক্ষ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা হয়।
ফলে জয়পুরহাট সদরের উক্ত গণশুনানির বিষয়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার জয়পুরহাট জেলার সচেতন নাগরিক এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি জানান এরকম অস্বাভাবিক ঘটনার মূল কারণ দুর্নীতি। তিনি আরো বলেন,' জনগণ এখন জাগতে শিখেছে, জনগণ এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছে।' তিনি কর্মকর্তাদের আরো মানবিক হতে বলেন। তিনি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, "দুর্নীতি প্রতিরোধের অংশ হিসেবে আজকের এই আয়োজন।" তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মাধ্যমে দুর্নীতি একটি সহনীয় পর্যায়ে আনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার উপর জোর দেন। এছাড়া তিনি দপ্তরপ্রধানদের নিজ দপ্তরে দুর্নীতি নির্মূলে কাজ করার আহবান জানান।
দুর্নীতি দমন কমিশন, বিভাগীয় কার্যালয়, রাজশাহীর পরিচালক মো: ফজলুল হক স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী।
গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি অফিসে সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানীর শিকার বা সেবা বঞ্চিত সংক্ষুব্ধ জনসাধারণ তাদের অভিযোগসমূহ জয়পুরহাট জেলার সকল সরকারি দপ্তর প্রধানদের উপস্থিতিতে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যাবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই উক্ত গণশুনানির মূল অভিপ্রায়। একই সাথে সেবা বঞ্চিত জনসাধরণের উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে দুদক কর্তৃক তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মোট ৭৯ টি অভিযোগের মধ্যে দুদকের তফসিল ভুক্ত ৬৭ টি অভিযোগের শুনানি হয়। যার মধ্যে ২ টি অভিযোগ অনুসন্ধানে নেয়া হয় এবং বাকি অভিযোগসমূহ প্রতিবেদন দাখিল সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করা হয়।
আ. দৈ. /কাশেম