বীমা কোম্পানি গ্রাহকদের একটি এসএমএস বা ক্ষুদে বার্তা পাঠাতে খরচ করে মাত্র ৪৪ পয়সা। ইউনিফাইড ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্মের কথা বলে সেই একই এসএমএস ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ১০ গুণ, ১৫ টাকা ৬০ পয়সা করে দিতে বাধ্য করা হয়েছে বীমা কোম্পানিগুলোকে। এজন্য গত সরকারের সময় ব্যবহার করা হয়েছে বহুল চর্চিত জঙ্গিবাদ অর্থায়নের মনিটরিংয়ের অজুহাত।
ইউনিফাইড ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্মের জন্য ‘দুয়ার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বিনা দরপত্রের কাজ দেয়া হয়। এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে তৃতীয় পক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয় গ্রাহকদের সব গোপন তথ্য।
জীবন বীমার পলিসি করলে সাথে সাথে গ্রাহকের মোবাইল ফোনে পৌঁছে যায় এসএমএস। পরবর্তীতে প্রিমিয়ামের টাকা জমাসহ বছরে ৭/৮টি ক্ষুদে বার্তা গ্রাহককে দিয়ে থাকে বীমা কোম্পানিগুলো।
ব্যাংকের মতো বীমা কোম্পানিগুলো নিজ নিজ গ্রাহককে এসএমএস সেবা চালু থাকার পরও ২০১৯ সালে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আরেকটি এসএমএস সেবা বাধ্যতামূলকভাবে চালু করে আইডিআরএ।
জঙ্গিবাদের অর্থায়নের ধুয়া তুলে বিনা টেন্ডার ইউনিফাইড ম্যাসেজিং ফ্ল্যাটফর্ম- ইউএমপির কাজ দেয়া হয় ‘দুয়ার’ নামে একটি কোম্পানি। শুরুতে পলিসি প্রতি ৩২ টাকা নির্ধারণ করলেও পরবর্তীতে তা প্রতি মাসের জন্য ৩ টাকা ৯০ পয়সা অর্থাৎ বছরে ১৫ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করে দুয়ার ও আইডিআরএ।
একই এসএমএস সেবা কোম্পানিগুলো মাত্র ৪৪ পয়সায় দিয়ে আসলে কেন আবারও দুয়ারকে এসএমএসের জন্য এত টাকা দিতে হবে?
গোয়েন্দা সংস্থার তথাকথিত জঙ্গি অর্থায়নের আশঙ্কার কথা বলে, ইউএমপির জন্য ১ কোটি বীমা গ্রাহকসহ মোট দুই কোটি মানুষের জাতীয় পরিচয় পত্র, ব্যাংক ডিটেলসহ যাবতীয় তথ্য দিতে হয়েছে তৃতীয় পক্ষ দুয়ারকে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশ্লেষকরা।
দুয়ারের প্যাডের ঠিকানা আদাবরের বায়তুল আমান টাওয়ারের লেবেল সিক্সে। অথচ সেখানে কখনও দুয়ার নামে কোম্পানি ছিল না বলে জানান ভবনের কর্মীরা।
ওয়েবসাইটের ঠিকানায় গিয়ে মিললো দুয়ারের সফটওয়্যার বিজনেস। জানা গেল বিনা টেন্ডারের পর বিনা ভাড়ায় বহাল তবিয়তে আইডিআরএ’র ভাড়াকৃত প্রজেক্ট অফিসে বসে ইতিমধ্যে বীমাখাতে থেকে শত কোটি বাগিয়ে নিয়েছে দুয়ার।
আ. দৈ/ আফরোজা