সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫,
২৭ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
শিক্ষা
ফিরেছে শিক্ষার পরিবেশ
স্বৈরাচারের পতনে ঢাবিতে সুবাতাস
শোয়াইব হোসেন সাধ
Publish: Friday, 22 November, 2024, 8:09 PM  (ভিজিট : 139)

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাই বিপ্লবের বীজ বোপিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)।  পরবর্তীতে এই আন্দোলন স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে সাড়া দেশে। শুরুতে কোটা সংস্কার আন্দোলন থাকলেও পরবর্তীতে তা রূপ নেয় স্বৈরাচার পতনের ১ দফা আন্দোলনে। আন্দোলনের তীব্রতায় এক পর্যায়ে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার। 

এই আন্দোলনে গোটা দেশের মানুষকে নেতৃত্ব দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কেমন ছিলো স্বৈরাচার আমলে দেশের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের সার্বিক অবস্থা? কিভাবে দিনাতিপাত করতেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা? বর্তমানে কেমন আছেন তারা? শিক্ষার সার্বিক পরিবেশই বা কেমন! স্বৈরাচার আমল নাকি বর্তমান সময়, কোন সময়কে চান তারা?

দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। স্বভাবতই উচ্চ শিক্ষা ও গবেষনার জন্য শিক্ষার্থীদের নিজ বিভাগ ও হলে সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার কথা। কিন্তু বিগত ১৬ বছরে আবাসিক হলে সবচেয়ে নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো দখল করে ছিলো ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন ও সদ্য নিষিদ্ধ হওয়া সংগঠন ছাত্রলীগ। 

হলগুলোতে কৃত্রিম সিট সংকট সৃষ্টি করে গণ্রুম-গেস্ট্রুমে ছাত্র নির্যাতনসহ নানা ধরণের অপকর্ম চালায় তারা। যে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও গবেষণার কাজে সাড়াদিন ব্যস্ত থাকার কথা সেই শিক্ষার্থীদের জোড়পূর্বক নিয়ে যাওয়া হতো দলীয় প্রোগ্রামে। শিক্ষার্থীদের জিম্মি বানিয়ে হাসিল করতো তাদের রাজনৈতিক ফায়দা। যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়া সহ সার্বিকভাবে বাধাগ্রস্থ হতো তাদের মেধার বিকাশ। আবাসিক হলে ছাত্রলীগের যাতাকলে পড়ে শিক্ষাজীবনের বেহাল দশা হয়ে পড়তো দেশের মেধাবী এই সন্তানদের।

কিন্তু জুলাই-বিপ্লব পরবর্তী বিপ্লবের সূতিকাগার এ বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান অবস্থা সম্পর্ণ ভিন্ন। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে। আগে যেখানে শিক্ষার্থীদের গণরুমে গাদাগাদি করে মানবেতর জীবনযাপন করতে হতো, গেস্টরুমে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো, এখন হলগুলোতে গণরুম বা গেস্টরুমের কোনো বালাই নেই। শিক্ষার্থীরা যেন ডানা মেলা পাখির মত উড়ে বেড়াচ্ছে মুক্ত আকাশে। এখন এমন কেউ নেই যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে তার জ্ঞান চর্চায়, চক্ষুশুল হবে তার মুক্ত চিন্তায়। 

আবাসিক হলের আগের অবস্থা এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুর্যসেন হলের ২০-২১ সেশনের আবাসিক শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান বলেন, স্বৈরাচারের আমলে আমাদের সকল শিক্ষার্থীদের যেন ক্রীতদাস বানিয়ে রাখা হয়েছিলো। তাদের কথা না শুনলেই সেদিন রাতে শুরু হতো অমানবিক নির্যাতন। তাদের এই নিষ্পেশনের যাতাকলে পড়ে অনেক শিক্ষার্থীই হারিয়ে ফেলেছে তাদের পড়াশোনার গতি। তবে আশার কথা এই যে স্বৈরাচার পতনের পর হলের শিক্ষার্থীরা এখন মুক্ত। তাদের বাঁধা বলতে আর কেউ নেই। হলে গণরুম ও গেস্ট্রুমের মতো নোংরা কালচারেরও বিলোপ ঘটেছে।

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পড়াশোনার পরিস্থিতি কেমন এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আবু হাসান বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি কার্যক্রম ঠিকভাবে চললেও একাডেমিক কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম পুরোদমে চালু হলেও বিপ্লবকালীন সময়ে আমরা ৩ মাস পিছিয়ে গেছি। কিন্তু এই ৩ মাস সময়কে পুষিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো উদ্দ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। 

স্বৈরাচার আমল নাকি বিপ্লব পরবর্তী সময়, কোন সময়ে শিক্ষার্থীরা ভালো আছেন বা ছিলেন এই প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলের শিক্ষার্থী মাহামুদ হাসান জানান, অবশ্যই বিপ্লব পরবর্তী সময়। বিপ্লব পূর্ব সময়ে আমরা ছিলাম পরাধীন ক্রীতদাসের মতো, আর এখন আমরা মুক্ত বিহঙ্গ। আগে সবাই মনে করতো হলে প্রকৃতই সিট সংকট কিন্তু হল থেকে স্বৈরাচারের দোসর ছাত্রলীগ বিদায়ের পর দেখা যাচ্ছে এখন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরাও সিট পেয়ে যাচ্ছে। গণ্রুমে গেস্টরুমে নির্যাতনের আর কোনো ভয় নেই। তাই বর্তমান পরিস্থিতি সবসময় বজায় থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বহির্বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে পারবে।  

আ. দৈ. /কাশেম/ সাধ

আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

সরকারি চাকুরিজীবীদের কাজে ফাঁকি দেয়ার সযোগ নেই: দুদক চেয়ারম্যান
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের অনুমোদন বাতিলের আল্টিমেটাম
সেই আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই
হারুন-বিপ্লবসহ পলাতক ৪০ পুলিশের পদক প্রত্যাহার
‘নাটক কম করো পিও’, তিশার উদ্দেশে বললেন শাওন
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

আটলা গ্রামের তরুণ যুবকদের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
পানির দাবিতে পল্লবীতে কালশী রাস্তা অবরোধ বিহারী ক্যাম্পবাসীর
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কমিটি, আহ্বায়ক- কিবরিয়া, সদস্য সচিব- ইমরান
অর্থপাচার মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম
আবাসিক হোটেলে প্রেমিকের সঙ্গে রিয়া মনি, ভিডিও ফাঁস করলেন হিরো আলম
শিক্ষা- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝