তৎকালীন সরকার পতনের পর থেকে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে লক্ষ্মীপুরে রাতের সড়ক-মহাসড়ক গুলো। আগের মতো পুলিশি টহল না থাকার কারনে সুযোগ নিচ্ছে ছিনতাইকারী ও ডাকাতরা। বেড়েই চলেছে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। চলমান এ ভীতিকর পরিস্থিতিতে এসব দুর্বৃত্তের লাগাম টানতে অভিযান চালাতে আইনশৃংখলাবাহীনির প্রতি অনুরোধ জানান ব্যাবসায়ী ও এলাকাবাসী।
রায়পুরের নতুনবাজারের পেট্রোল ব্যাবসায়ী আবদুল খালেক বেপারীসহ গাজি কমপ্লেক্সের কয়েকজন ব্যাবসায়ী জানান, রায়পুর-চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ব্যাস্ত আঞ্চলিক মহাসড়কে লঞ্চ যাত্রী ছাড়াও পানপাড়া ও মীরগন্জ সড়কে ডাকাতির সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকের গ্রাহকদের টার্গেট করে। রাত নয়টার পর থেকে ভোরের দিকে পানপাড়া, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কাপিলাতলি ও মীরগন্জ সড়কের নিরিবিলি এবং-অনেকটা বিদ্যুৎহীন অন্ধকার সড়কে রিকশাযাত্রীদের নিশানা বানায় ছিনতাইকারীরা।
নতুনবাজারের পেট্রোল ব্যাবসায়ী ইকবাল জানান, সোমবার রাত দশটায় পানপাড়া সড়ক দিয়ে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। ব্রাক অফিসের সামনে পৌঁছলে আমাকে আটক করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ১টি দামি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ছিনতাইকারির দল। এসময় ছুরি দিয়ে আঘাতের ভয় দেখিয়ে দামি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়।
এছাড়াও-ওই সড়কের খলিফা মসজিদের সামনে থেকে সেলিম নামের দিনমজুরের অটোরিকশা চুরিসহ কয়েকটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে।এ সড়কে চলাচলকারি সংবাদকর্মী ফরহাদ হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবিরা জড়িত। তাদেরকে পূর্বের ন্যায় বর্তমানেও কঠোরভাবে দমন করতে হবে প্রশাসনকে।মাদক, ইভটিজিং, মারামারি, চুরিসহ সকল অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে এরাই।
পানপাড়া সড়কে চলাচলকারি বিল্লাল হোসেন হাওলাদার বলেন, যারা এলাকার পরিচিত চোর ও ছিনতাইকারি, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা গেলেই জানা যাবে কারা জড়িত রয়েছে।
এছাড়াও রায়পুর থেকে হায়দারগন্জ সড়কের মধ্যবর্তী স্থান সোলাখালি ব্রিজের নিকট ব্যবসায়ী, আমির ভ্যারাইটিজ ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আমির হোসেন জানান,কয়েকয়দিন আগেও গভীর রাতে নাম্বার বিহীন একটা সাদা প্রাইভেটকারে করে এসে ব্রিজের উপরে এক ডিম ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় তিনজন অস্ত্রধারী।
পুলিশের একাধিক সূত্র বলছেন, বেশির ভাগ ছিনতাই-ডাকাতি ঘটছে রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত। গত এক মাসে যেসব চুরি এবং ছিনতাইয়ের ঘটেছে সবই এ সময়ের মধ্যে।
তবে রায়পুর থানার ওসির দাবি, পুলিশের জনবল আছে, তবে পরিবহন ব্যাবস্থা না থাকায় আমরা চট করে অভিযান চালাতে পারছিনা। যতটুকু সম্ভব সিএনজিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তা চেষ্টা করছি।
রায়পুর থানার নবাগত ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘দুর্গাপূজার পর রায়পুরে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সকলের পরামর্শ নেওয়া হয়। রোববার রাতেও রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের বর্ডার বাজারে ফোর্স নিয়ে নীজেই দায়িত্বে ছিলাম। অপরাধী যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অপরাধ করলে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক পরিচয় দিলেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ’
এদিকে-২০ অক্টোবর রাতে সরেজমিনে রায়পুর-লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে হাইওয়ে ও থানা পুলিশের পেট্রল দেখা গেলেও অন্য সড়কে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে স্থানীয়দের বক্তব্য, ৫ আগস্টে পর থেকে পুলিশের মধ্যে এখনো নিষ্ক্রিয়তা কাটেনি
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন বলেন জেলার প্রায় রুটে টহল টিম চালু রয়েছে। মহাসড়ক সচল রাখতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ। আমাদের রায়পুর ও রামগন্জ থানাসহ গাড়ীগুলো ও সকল মালামাল জ্বালিয়ে দেয়াসহ কয়েকটি স্থাপনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অল্প সময়ের ব্যবধানে আমরা সেগুলো চালু করেছি। এই দুটি উপজেলায় সিএনজির মাধ্যমে টহল দেয়া হয়।ইতিমধ্যে আইজি স্যার ঘোষণা দেন বিশেষ অভিযানের। আমরা বিষয়টি নিয়ে সহসাই কাজ শুরু করবো।
আ. দৈ. /কাশেম /রাশেদ