তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও মারপিটে আহত হওয়ার ঘটনায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক, সদস্য সচিব ও উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এমন হয়রানিমূলক মামলায় সাক্ষী হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তিন নেতাকে শো-কজ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহ আগে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টিটুল সাঘাটায় এসে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন।সে সময় মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে স্থানীয় রেজাউল করিম রনির সাথে কথা কাটাকাটি হয় উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান আনিস সহ কয়েকজনের। মূলত রেজাউল করিম রনি ১৫ বছর আগে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি থাকলেও পরে দলত্যাগ করে আওয়ামীলীগের সাথে শখ্যতা গড়ে তোলেন এবং আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ডে যোগ দেন, ঐদিন এমন অভিযোগ করা নিয়েই দু-পক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটির সূচনা হয় বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। যা পরে হামলা পাল্টা-হামলায় রুপ নেয়। পড়ে এক পর্যায়ে সংঘর্ষে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন-আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক সহ তিনজন আহত হন।
আব্দুর রাজ্জাকের ডান হাতের একটি আঙ্গুল কেটে পড়ে গেলে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে প্রতিপক্ষের মারপিটে রেজাউল করিম রনিসহ তিনজন আহত হয়ে সাঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এই ঘটনার জের কে কেন্দ্র করে উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক স্বপন শেখ, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান আনিস ও উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মাহফুজ আহমেদ টিটু সহ ৭জনকে আসামি করে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন রেজাউল করিম রনি। ঘুড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক স্বপন শেখ জানান, ঘটনার সাথে জড়িত নই, উপস্থিতও ছিলাম না।
অথচ আমাকে আসামি করা হয়েছে। ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ করে হঠাৎ বিএনপির প্রোগ্রামে এসে পরিবেশ নষ্ট করতে চায় একটি পক্ষ। এ ব্যাপারে কথা হল রেজাউল করিম রনি জানান, আমাদেরকে কোন কারন ছাড়াই মারপিট করে আহত করা হয়েছে। আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি করে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কোন পদে নাই। কেউ কোন প্রমাণ দেখাতে পারবে না।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপ বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর রনি আওয়ামী লীগে থেকে বিএনপির লোকজনকে হয়রানি করেছে। বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেই সে আওয়ামী লীগে গিয়েছিল। বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জেতাতে কাজ করেছিল। আজ আবার বিএনপির লোকজনের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা করে পরিবেশ উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা (ওসি তদন্ত) সোহেল রানা জানান, ওনারা দুই পক্ষই মারামারির মামলা করেছেন। যা তদন্ত চলছে। এদিকে ওই মামলার সাক্ষী হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ন-আহবায়ক রোকন মন্ডল, আব্দুর রাজ্জাক ও সফের আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী বলেন, দলের লোকজনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি পক্ষ। এমন করে কোন লাভ হবে না।
আ. দৈ. /কাশেম/মিজান