ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ বছর,তার ছোট বোন শেখ রেহানার ৭ বছর ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকর ২ বছরের সাজার রায় ঘোষণা করেছে বিচারিক আদালত। রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবীরা গণমাধ্যমকে জানান,এই রায়ে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
গতকাল সোমবার (১ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার পর মামলাটির সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মঈনুল হাসান বলেন, আমরা সব সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন দণ্ডবিধির আলোকে অভিযোগ এনেছিলাম এবং সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রত্যাশা করেছিলাম। সেটা হয়নি। এখন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।
এর আগে এদিন ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানার ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দুদকের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ বছর, তার বোন শেখ রেহানার ৭ বছর, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এই তিনজনকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের পাশাপাশি অন্য ১৪ জন অভিযুক্তকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে তাদেরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরও দুই আসামি যুক্ত হয়ে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ। পরে যুক্ত হওয়া দুই আসামি হলেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আ. দৈ./কাশেম