বাংলাদেশের বন বিভাগের অত্যন্ত প্রভাবশালী,ক্ষমতাবান ও কৌশলী চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম। তিনি শত কোটি টাকার ঘুষের বিনিময়ে একদিনেই ৭৭ কর্মচারীকে বিভিন্ন দপ্তরে বদলি করে বেশ আলোচনায় রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের অধীন ১০টি বিভাগীয় অফিসের আওতায় প্রতিটি রেঞ্জ থেকে ১ লাখ, প্রতিটি চেক ষ্টেশন থেকে ১ লাখ, বনবিট থেকে ৫০ হাজার টাকা মাসিক চাঁদা আদায় করেন।
এছাড়া, রেজাউল করিমের নামে ঢাকার লালমাটিয়ায় ৭ কোটি টাকার দুটি ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে স্ত্রীর নামে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট ও সাতক্ষীরার তালা থানায় ২০ একর জমি ক্রয়ের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে দুদক। যার ভিত্তিতে দুদক তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে প্রাপ্ত চাঞ্চল্যকর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন অফিসে অভিযান চালিয়ে অনেক তথ্য উপাত্ত্ব সংগ্রহ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর ওই সব রেকর্ডপত্র পর্যালোচান করে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক।
আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুদকের একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে এবার অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে দুদক এনফোর্সমেন্টের অভিযানে ড. মোল্যা রেজাউল করিমকে ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনা ১৩টি অভিযোগের মধ্যে ৩ টি অভিযোগের বিষয়ে পর্যাপ্ত সত্যতা মিলেছে।
এরমধ্যে কৗশলী চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম তার অধীনস্থ কতিপয় কর্মকর্তা/কর্মচারীর মাধ্যমে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেন। বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি নীতিমালা, ২০০৪ লঙ্ঘন করে একই দিনে ফরেস্ট গার্ড, ফরেস্টার, নৌকাচালক ও ডেসপাস রাইডার পদমর্যাদার মোট ৭৭ জন কর্মচারীকে বদলি করা হয়। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে অনেকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বদলি করা হয়েছে এবং অনেককে মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও বদলি করা হয়নি।
এছাড়া, চট্টগ্রাম বন অঞ্চলের অধীন ১০টি বিভাগীয় অফিসের আওতায় প্রতিটি রেঞ্জ থেকে ১ লাখ, প্রতিটি চেক ষ্টেশন থেকে ১ লাখ, বনবিট থেকে ৫০ হাজার টাকা মাসিক চাঁদা আদায়ের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
দুদকের সূত্র মতে,রেজাউল করিমের আস্থাভাজন হিসাবে পরিচিত চট্টগ্রাম ফরেস্ট একাডেমির ফরেস্টার আব্দুল হামিদের মধ্যস্থতায় এ বদলি বাণিজ্যের বিপুল অর্থ লেনদেন করেন। ফেনীতে বাগান প্রকল্পে ১ লাখ গাছ লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
আ. দৈ./কাশেম