ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্তরা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, রাজধানীর গুলশানে আবাসিক এলাকার প্লটকে বাণিজ্যিক প্লট হিসেবে ব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৭১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সেগুনবাগিচায় দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান,
দুদকের করা প্রথম মামলায় মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যেখানে নাফিজ সরফাত ছাড়াও আসামি হয়েছেন তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদ, ছেলে রাহীব সাফওয়ান শরাফত চৌধুরী আসামি হয়েছেন। এছাড়া পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান, ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান এস কে মেহেদী হাসান, ডালিয়া চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, সাবেক এমডি রিমন কর্মকার, সাজিদ হক, আমনি নাওয়ার চৌধুরী।
দুদকের দ্বিতীয় মামলায় নাফিজ সরফাত তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদ, ছেলে রাহীব সাফওয়ান শরাফত চৌধুরীর সঙ্গে আসামি হয়েছেন সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
প্রথম মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে একে অন্যের সহায়তায় ও পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন না করে ডাইনেস্টি হোমস লিমিটেডের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের ভবন ভাড়া চুক্তি করে পদ্মা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এবং গুলশান-২ শাখা আবাসিক এলাকার সিইএন(ডি) ব্লকের ১০২ ও ১০৩ নং রাস্তার ২২/এ নং প্লটে ২০তলা বিশিষ্ট ভবন ফাইন্যান্স স্কয়ারে করেন। এ স্থানান্তর করে কমপক্ষে ১৪.০৭ কোটি টাকা অগ্রীম গ্রহণ এবং ভবন নির্মাণ ব্যয় আনুমানিক ২ কোটি টাকাসহ ন্যূনতম (১৪.০৭ কোটি + ৫২.৪৪ কোটি) মোট ৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা ছদ্মাবৃত করে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সেল কোম্পানি দ্বারা অপরাধ করেছেন।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা একে অন্যের সহায়তায় ও পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে রাজউকের বিদ্যমান বিধি-বিধানের লংঘন করে আবাসিক প্লটকে বাণিজ্যিক প্লটে রুপান্তর করেন। তৎকালীন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তার নিজ পদের ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক বিশেষ নির্দেশনা (অনুশাসন) দিয়ে গুলশান আবাসিক এলাকার ১০২ ও ১০৩ নং রাস্তায় সংযোগস্থলে অবস্থিত সিইএন(ডি) ব্লকের ২২/এ নং সম্পূর্ণ আবাসিক শ্রেণিভুক্ত প্লটটিকে বাণিজ্যিক শ্রেণিতে রূপান্তর করার সুযোগ করে দেন।
অভিযুক্তরা অবৈধভাবে অর্জিত ন্যূনতম ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার সম্পদ আত্মসাৎ ও পরবর্তী সময়ে হস্তান্তর করার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করার অপরাধ করেন।
এর আগে ২০২৪ সালের আগস্ট এ ক্ষমতার পদ পরিবর্তনের পর নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত ১৩ এপ্রিল পদ্মা ব্যাংক থেকে ৫ কোটি টাকা আতসাতের চেষ্টা করার অভিযোগে নাফিজ সারাফতের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
আ. দৈ./কাশেম