বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য মানুষ জীবন দেওয়ার পর এখনো কেন অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তার ভাষায়, ‘বাংলাদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, স্বায়ত্তশাসন, গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর ছাত্র আন্দোলন এবং চব্বিশের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। এত জীবন দেওয়ার পর এখনো কেন অসঙ্গতি নিয়ে আলোচনা হয়?
শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই প্রশ্ন তোলেন নজরুল ইসলাম খান।
আক্ষেপের সুরে এই বিএনপি নেতার জিজ্ঞাসা, ‘এ দেশের মানুষ আর কত জীবন দেবে, আর কত লড়াই করবে?’
তিনি বলেন, ‘মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে ওঠে, হাইস্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, ধীরে ধীরে মানুষ উন্নত হয়। ধীরে ধীরে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের দেশে শ্রম আইনে আছে সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে, কিন্তু আমাদের দেশে যত শ্রমিক আছে তার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শ্রমিকও নিয়োগপত্র পায় না। তাদের গ্রাচ্যুইটি, সুবিধা কোনোটাই দেওয়া হয় না, যা শ্রম আইনে লেখা আছে। যারা শ্রমিককে কম মজুরি দেয় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি বা অভিযোগ দেওয়ার কোনো মেকানিজম নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নারী, শিশু, যুবক, শ্রমিক সবার জন্য আইন আছে। কিন্তু তারা কি আইনের বিষয়ে কিছু জানেন, বোঝেন বা সুফল ভোগ করতে পারেন?
নজরুল ইসলাম খান মনে করেন, রাজনৈতিক দলের যারা প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের উচিত সবাইকে আইন বুঝিয়ে দেওয়া, আইনের সুফল বোঝানো। আর যদি তা না করা হয়, সাধারণ মানুষ সেই তিমিরেই থেকে যাবে বলে তার মন্তব্য।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন প্রমুখ।