শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫,
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

শুক্রবার, ১ আগস্ট ২০২৫
জাতীয়
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম কাছে অভিযোগ গ্রহণ করেন
শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের অভিযোগ বিএনপির সালাহ উদ্দিনের
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Tuesday, 3 June, 2025, 4:59 PM  (ভিজিট : 94)

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্যাতন ও গুমের শিকার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ নিজেই এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে হাজির হয়ে গুমের সুনিদিষ্ট অভিযোগ দাখিল করেছেন। তার দায়ের করা অভিযোগে ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো বেশ কয়জন অজ্ঞাত রয়েছে। 

অভিযুক্ত ৭ জন হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতনামা অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গিয়ে সালাহউদ্দিন এই অভিযোগ দেন। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে অভিযোগ তুলে দেন সালাহউদ্দিন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, গুমের অভিযোগ জানাতে আরও আগেই তার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে আসার কথা ছিল। বিভিন্ন রকমের ব্যস্ততাসহ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে একটু দেরি হয়েছে। গুমের ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন। তদন্তে আরও অনেক আসামির নাম বের হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 সাংবাদিকদেও এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, বিচারে ন্যায় দেখতে চান তিনি। আইন যেভাবে মনে করবে, বিচারে যেভাবে সাব্যস্ত হবে, তিনি সেটা মেনে নেবেন। তবে তিনি চাইবেন, জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ সাজা হোক। কিন্তু আইন-আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন, কোন সাজা হবে।

সালাহউদ্দিন বলেন, গত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে তার মতো যারা গুমের শিকার হয়েছেন, যারা পুলিশের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, যারা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন, যাঁরা বিভিন্নভাবে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, বিভিন্নভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হয়েছেন, সবকিছুর অভিযোগে যেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম যাতে সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়, সে জন্য তদন্ত দল বাড়ানোসহ লজিস্টিক সহযোগিতা যেন সরকার দেয়, সেই আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বর্তমানে বিচার বিভাগ স্বাধীন বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তার আশা, স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া চালু থাকবে। সবাই যেন দেখতে পায়, সুবিচার নিশ্চিত হচ্ছে, কোনো পক্ষপাত হচ্ছে না। ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্যক্রম মানুষ সরাসরি দেখতে পাচ্ছে, এটা দেশের জন্য নজির স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে কি না, তা সালাউদ্দিনের কাছে জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। এটা শুধু বিএনপির প্রতিশ্রুতি নয়, এটা জাতির আকাঙ্ক্ষা, জুলাই শহীদদের রক্তের আকাঙ্ক্ষা—ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিগত সরকার আমলে সংঘটিত সব অপরাধের বিচার করা হবে।’

২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিনকে তুলে নেওয়া হয় বলে তখন অভিযোগ করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। অন্যদিকে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। সে সময় সালাহউদ্দিন বিএনপির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। ভারতের পুলিশের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল, সালাহউদ্দিন শিলংয়ে উদ্‌ভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করার সময় লোকজনের ফোন পেয়ে তাকে আটক করা হয়।

সালাহউদ্দিনকে আটক করার পর বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে দেশটির ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে ২০১৮ সালে সালাহউদ্দিন খালাস পান। ভারত সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।

২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন। আদালত তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৮ মে সালাহউদ্দিন ভ্রমণ অনুমোদনের জন্য আসাম রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি ভারতে আটকে আছেন। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে যে অনুপ্রবেশের মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভারতে থাকার কারণে তিনি নিজের পাসপোর্ট নবায়নের সুযোগ পাননি। ভ্রমণ অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি নিজের দেশে ফিরতে চান। দেশবাসী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে চান।

আ. দৈ./কাশেম
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ করায় ড. ইউনূসের সরকারকে সাধুবাদ ফখরুলের
শাহবাগে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়েছে জুলাই যোদ্ধাদের অপর গ্রুপ
আগারগাঁও-কারওয়ান বাজার ‘জুলাই আর্ট ওয়ার্কের উদ্বোধন
এনআরবিসি ব্যাংকের কুমিল্লা জোনে টাউন হল মিটিং অনুষ্ঠিত
রাজনৈতিক গোপন বৈঠকে অংশ গ্রহণ, মেজর সাদিকের বিচারে তদন্ত আদালত গঠন
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

কমার্স ব্যাংকের এমডি মোশারফ হোসেনকে অপসারণ
দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত ওমর ফারুক এমডি হতে মরিয়া
কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের পক্ষে ইবি উপাচার্য
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে সংসদ: সালাহউদ্দিন
এবার ভারতীয় মিডিয়া ফাঁস করল ওবায়দুল কাদেরের কুকীর্তি
জাতীয়- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝