দুদকের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বাতিল করেছে হাইকোর্ট। একই সাথে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তারেক রহমান এবং ডা. জুবাইদা রহমানের পক্ষ থেকে করা আপিল গ্রহণ করে তাদেরকে দণ্ড থেকে খালাসের রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ওই মামলার দুইটি ধারায় তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর ডা. . জুবাইদা রহমানের একটি ধারায় ৩ বছরের কারান্ড থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (২৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে আসামি পক্ষের দায়ের করা আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ করেন উক্ত আদালত। গত সোমবার (২৬ মে) হাইকোর্টের এই বেঞ্চে শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন আপিলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও জাকির হোসেন ভূইয়া, তাদের সমর্থণে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট রুকনুজ্জামান সূজা ও মো. মাকসুদ উল্লাহসহ অন্য আইনজীবীরা। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আসিফ হাসান। শুনানি শেষে ওই দিনই রায় ঘোষণার জন্য ২৮ মে তারিখ নির্ধারণ করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, এর আগে ২১ মে হাইকোর্ট জুবাইদা রহমানের করা আপিল শুনানির জন্য ২২ মে দিন রাখেন। ওইদিন শুনানি নিয়ে আদালত ২৬ মে শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।
বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।এ মামলায় ২০২৩ সালের ২ আগস্ট রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ। রায়ে দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড (৬ ও ৩ বছর, একসঙ্গে চলবে) এবং জুবাইদা রহমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই মামলায় জুবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাজা স্থগিত চেয়ে জুবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে তার বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ৬ মে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি তারেক রহমানের সঙ্গে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়ে ছিলেন।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জুবাইদা রহমান, যা ১৩ মে মঞ্জুর করেন উচ্চ আদালত। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন এবং জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ১৪ মে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং একই সঙ্গে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ২৮ মে দিন নির্ধারণ করেছিলেন।
আ.দৈ/আরএস /কাশেম