শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫,
৪ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
শিক্ষা
ঢাবি ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগ চান ছাত্রদল নেতারা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘না’
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Wednesday, 14 May, 2025, 6:39 PM  (ভিজিট : 118)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। এর দায় প্রশাসনকে দিয়ে ঢাবি উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের পদত্যাগের দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

বুধবার (১৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তবে এ দাবির সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্বিমত প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন সাম্য।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ৫ আগস্ট-পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রশাসন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, আমরা ভেবেছিলাম নতুন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। কিন্তু ফজলুল হক হলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করা হয়েছে। চারুকলায় মোড়াল পুড়িয়ে ফেলা হলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখি, ভিসি ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব। দ্রুত পদক্ষেপ না নিয়ে ভিসি ও প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় সাম্যকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, এ ঘটনা প্রমাণিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আর নিরাপদ নয়। এর আগেও মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জলকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তা দেখেছি।

তিনি দাবি করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ। প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তার পদত্যাগ দাবি করছি। এক‌ই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে উপাচার্যও দায় এড়াতে পারেন না। তাই তারও পদত্যাগ দাবি করছি। গতকাল উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। তাই আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও এর দায় দিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার‌ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত। অনতিবিলম্বে সাম্যের হত্যার বিচার দাবি করছি। প্রতিটি হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গ্ৰেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেও আওয়ামী লীগের অনেক দোসর রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্ৰেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় শিক্ষার্থী সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত ভিসি ও প্রক্টরের কাছ থেকে কোনো ধরনের স্পষ্ট বিবৃতি আমরা পাইনি।

তিনি বলেন, এই প্রশাসন দায়িত্ব ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচার করা। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো স্পষ্ট অবস্থান আমরা দেখতে পাইনি। আমাদের মনে হয় তাদের দ্বারা কখনো সাম্য হত্যা বিচার করা সম্ভব না।

হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, আগামীতে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ একজন ছাত্রদল নেতা যদি হামলার শিকার হয়, তাহলে আমরা সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকাররের পদত্যাগ দাবি করব।

এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতে, ক্যাম্পাসের বাইরের এলাকায় হত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করা অযৌক্তিক।শিক্ষার্থীরা বলছেন, সাম্যের হত্যাকাণ্ড সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘটে, যা গণপূর্ত বিভাগের অধীনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্যানের গেট বন্ধ করার চেষ্টা করলেও বাম ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থী এবং উদ্যানের মাদক কারবারিরা সেই গেট খুলে দেয়।

ঢাবি শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, লাশের রাজনীতি করে ভিসি স্যারকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে একটি দল। যারা প্রকৃত অপরাধীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেনি, তারাই এখন ভিসি স্যারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি কি খুনি? নাকি তাকে খুনি বানিয়ে রাজনীতির ফায়দা লুটতে চায় কেউ? একজন ভিসি হিসেবে তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য যেসব সাহসী ও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নিয়েছেন, তার কোনো তুলনা নেই।

ঢাবি বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী বলেন, সাম্য ভাইয়ের হত্যাকাণ্ড সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘটেছে, এটা দেখার দায়িত্ব ভিসি বা প্রক্টরের নয়। এর দায়ভার তাদের ওপর বর্তায় না। দীর্ঘদিন ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ করার চেষ্টা করা হলেও নানা মহলের বাধায় তারা পারেননি। এমনকি ক্যাম্পাসকে বহিরাগতদের জন্য নিষিদ্ধ করলেও পরে বিভিন্ন চাপের মুখে তা খুলে দিতে হয়। আমরা চাই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হোক, নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি এবং আলোর সংখ্যা বাড়ানো হোক।

উল্লেখ্য, ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাম্য এবং তিনি স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আ.দৈ/আরএস

   বিষয়:  ঢাবি   ভিসি   প্রক্টরের   পদত্যাগ   চান   ছাত্রদল    নেতারা   সাধারণ   শিক্ষার্থীদের   ‘না’  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

মাফিয়াতন্ত্র ও গডফাদারতন্ত্ররে বিরুদ্ধে এনসিপির আন্দোলন চলবে
ঢাকায় জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ শনিবার
এই সরকার দুইটি দলকে সহযোগিতা করছে: মির্জা আব্বাস
কুষ্টিয়ায় ইবি শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যু ‘রহস্যজনক’ বলছেন সহপাঠী-স্বজনরা
গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা: সারা দেশে ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনাকে ‘ডেভিল রানী’ বললেন সোহেল তাজ
এনসিপির ফরিদপুরে পদযাত্রায় ব্যাপক অংশগ্রহণ
গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা-পটুয়াখলী মহাসড়ক অবরোধ
১৬ জুলাই মার্চ টু গোপালগঞ্জ: সারজিস
শিক্ষা- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik$gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝