বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে চীন। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও উত্তরবঙ্গে একটি করে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য স্থান নির্বাচন চলছে। চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই হাসপাতালের জন্য জমি চূড়ান্ত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
চীনের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও দেশে এসে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনা সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য এক হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল উপহার হিসেবে দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, খুব শিগগিরই চীনের একটি ২০০ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ঢাকার উপকণ্ঠ পূর্বাচলে একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওই সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কুনমিংয়ের অন্তত তিন থেকে চারটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পূর্বাচলে পূর্ণাঙ্গ তৃতীয় স্তরের হাসপাতাল নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। চীনা রাষ্ট্রদূত আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবে চীন।
চীন আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের জন্য সুদের হার কমানোর বিষয়টি তারা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। পাশাপাশি পানিপ্রবাহ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের বাস্তবায়ন পরিকল্পনাও স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বেইজিং।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতের সাথে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। ভারত ঢাকায় তাদের হাইকমিশনের কর্মীদের প্রত্যাহার করে এবং সাময়িকভাবে ভিসা প্রদান বন্ধ রাখে। এর ফলে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগীরা বিপাকে পড়েন। ফলে দেশীয় হাসপাতালের পাশাপাশি অনেকেই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের দিকে ঝুঁকছেন।
এ অবস্থায় চীনের এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।