রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫,
১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার

রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
জাতীয়
ডিসেম্বরের নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ধোয়াশা কাটছে না
শাহীন রহমান
Publish: Sunday, 9 March, 2025, 6:39 PM  (ভিজিট : 97)

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ  ঘোষণা আগেই করা হয়েছে। রোডম্যাপ অনুযায়ি ডিসেম্বরের নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এখানে শেষ নয়। ডিসেম্বরের পাশাপাশি সরকারের ভেতর থেকেই নির্বাচনের তারিখ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেয়া হয়েছে। এসব তথ্যে মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দল বেশি সংস্কার চাইলে নির্বাচন আগামী বছরে জুনে। 

কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরের। আর কখনো বলা হয়েছে আগামী বছরের মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের ভেতর থেকে নির্বাচন নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্যে বিএনপি রাজনৈতিক লগুলোর মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ফলে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে এক ধরনের ধোয়াশা তৈরি হয়েছে।
আরও সন্দেহ বাড়ছে সরকারের প্রশয়ে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে। ইতোমধ্যে নাহিদের নেতৃদ্বে গঠন করা হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

 উপদেষ্টাপর পদ থেকে পদত্যাগ করে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন নাহিদ। দলের দায়িত্ব নেয়ার পরও অনেকটা সরকারি সুরেই কথা বলছেন। তিনি এর আগে এএফপির সাক্ষৎকারে বলেন এ বছর নির্বাচনও নাও হতে পারে। যদিও পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন তার বক্তব্য ঠিক মতো অনুবাদ করে প্রচার করা হয়নি। সংশোধনী দিয়ে বলেন, পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে নাজুক অবস্থা তাকে এ বছর নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়বে।

কিন্ত সংশোধনীতে সন্দেহ দূর হচ্ছে না বিএনপির। দিন যতই যাচ্ছে নির্বাচন নিয়ে দলটির মধ্যে এক ধরনের সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাতকারে নতুন করে আগামী মার্চেই নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল ইসলামও প্রথমবার আগামী বছরের জুনে নির্বাচনের ইঙ্গিত দিলেও সম্প্রতি সময় তিনিও আগামী বছরের মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। সরকারের ভেতর থেকেই নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না। ফলে আগামী নির্বাচন ঠিক কবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ধোয়াশা কাটছে না।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এর আগে স্থানীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে তিনি বলেন স্থানীয় সরকার পরিষদে জনপ্রতিনিধি না থাকায় সাধারণ জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে বিএনপি বরাবরই স্থানীয় নির্বাচনের বিরোধীতা করে আসছে। জাতীয় নির্বাচনের স্থানীয় নির্বাচন  হলে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
অপর দিকে নির্বাচন কমিশনও থেকে বলা হচ্ছে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে। সিইসি এর আগে জানান জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করা হলেও জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর করা সম্ভব হবে না। নির্বাচন পেছাতে। যদিও ইসি থেকেও বরাবরই বলা হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও আগে জাতীয় না, স্থানীয় নির্বাচন হবে তাও স্পষ্ট নয়। জানা গেছে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর  মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপিসহ কিছু দল আগে জাতীয় নির্বাচনের দাবী জানালেও জামায়াত ইসলামিসহ বেশকিছু দল এবং নবগঠিত এনসিপিও আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। এছাড়া বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবী জানালেও জামায়ত ইসলাম সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবী করেছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে দলটি।

রাজনৈদিত দল ছাড়াও অনেক বিশেষজ্ঞ আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। তারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়া যৌক্তিক। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারকাজ শেষ করা এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনার ওপর জোর দেন তাঁরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করাটা যৌক্তিক’ মন্তব্য করে বলেন, দুটি সংস্কার কমিশন জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করার কথা বলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ আগে স্থানীয় নির্বাচন চান। তিনি বলেন, আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শাফিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনপ্রতিনিধি না থাকায় মানুষ সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে শিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিরা জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য এগিয়ে আসবেন। দলীয় সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন হলে প্রার্থী কেনা-বেচা হয়, এর বাইরে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা নিজের ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করান। তাঁদের বিজয়ী করতে দলীয় ও প্রশাসনিক প্রভাব বিস্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্যও আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। 

এদিকে ইনোভিশন বাংলাদেশ নামে একটি গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে দেশের ৫৮ ভাগ মানুষ এ বছরই নির্বাচন চায়। জরিপের অংশ নেওয়া ৫৮ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোটার ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন চান। তাদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার জুনের মধ্যে এবং ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়ার পক্ষে। ১০ দশমিক ৯ শতাংশ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। শনিবার সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৬২ শতাংশ মানুষ ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে তারা কাকে ভোট দেবেন। এর মধ্যে ৬৫ দশমিক ৭ শতাংশ তাদের পছন্দের দলের কথা জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দল হলো বিএনপি (৪১ দশমিক ৭ শতাংশ)। এর পরের অবস্থানগুলোতে আছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (৩১ দশমিক ৬ শতাংশ), আওয়ামী লীগ (১৪ শতাংশ), নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি (৫ দশমিক ১ শতাংশ) এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল (৭ দশমিক ৬ শতাংশ)।

তবে জরিপে যাই বলা হোকনা কেন বিএনপির এই মুহুর্তে দাবী দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণা করা। বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ মাসেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চান তারা।  একই সঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়কের বক্তব্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

আ.দৈ/আরএস
   বিষয়:  ডিসেম্বরের   নির্বাচন   অনুষ্ঠান   নিয়ে   ধোয়াশা   কাটছে   না  
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

টঙ্গীতে পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
টঙ্গীতে ঝুটের গুদামে ভয়াবহ আগুন, আধাঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে
ইউনিয়ন ব্যাংকেরও শীর্ষ খেলাপি দেশবন্ধু গ্রুপ
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির ৮৯৬তম সভা অনুষ্ঠিত
ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সভা
ঢাকা দুই সিটিতে আওয়ামী দোসর ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় বিএনপির ব্যাপক তদবির
পদত্যাগ করলেন আটাবের সবুজ মুন্সী
রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১২ বছর , তবু মেলেনি বিচার, নিশ্চিত হয়নি ক্ষতিপূরণ
শিগগিরই ঢাকা শহরে অটোরিকশার ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে অভিযান: ডিএনসিসি প্রশাসক
জাতীয়- এর আরো খবর
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝