মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আরও ছয় মাসের জন্য দেশটিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত নির্দেশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি এক টেলিগ্রাম বার্তায় জানায়, দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য এখনও বহু কাজ বাকি রয়েছে। বিশেষ করে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে জান্তা সরকার।
২০২১ সালে অং সান সু চির গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে দেশটি কার্যত গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যেই সামরিক সরকার চলতি বছর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, যদিও তারা এখনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি।
অন্যদিকে, দেশব্যাপী সশস্ত্র প্রতিরোধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সামরিক জান্তা। তবে সমালোচকদের মতে, এ নির্বাচন আসলে সামরিক শাসন দীর্ঘায়িত করার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ।
জান্তা সরকারের বিরোধীরা এই নির্বাচনকে অবৈধ ও লোক দেখানো বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, এটি জনগণের প্রকৃত ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে সামরিক শাসনের বৈধতা দেওয়ার একটি কৌশল। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছে এবং যেকোনো মূল্যে ভোট প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করছে।
সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের ফলে মিয়ানমারে তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণবিক্ষোভ এখন সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, চলমান সংঘাতে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশটি চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমানে মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।