ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধান মন্ত্রীর শেখ হাসিনার পতনের পর এবার দেশে- বিদেশে শেখ পরিবার এবং তাদের স্বজনদের দুর্নীতি,অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, মানিলন্ডারিং এবং অর্থ আত্মসাতের নতুন নতুন ভয়াবহ ঘটনা গণমাধ্যমে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতের দিল্লীতে পালিয়ে যাবার পরই শেখ পরিবার এবং তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে দেশে- বিদেশে বিপুল পরিমান অর্থ পাচার,দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ার তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। কারণ টানা ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন অপ্রতিদ্বন্দ্বী সরকার বাংলাদেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ইতোমধ্যে শেখ পরিবার এবং তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে লুটপাট ও অপকর্মের ঘটনাগুলো বেরিয়ে আসছে।
সূত্র মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকীর মেয়ে ওই সময় স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন। তিনি তার ঠিকানা দিয়েছিলেন গ্র্যান্ড গোথিক ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট। যেটি টিউলিপের লন্ডনের কিংস ক্রস ফ্লাটের খুব কাছে অবস্থিত। এই ফ্লাটটি ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি কেন টিউলিপকে এত দামী ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন সেটি নিয়ে ধোয়াশা রয়েছে।
সর্বশেষ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনার দেবরের স্ত্রী ও টিউলিপ সিদ্দিকের চাচী শাহীন সিদ্দিক এবং শাহীন সিদ্দিকের মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের দেশ মাল্টার পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টার ঘটনাটি বেরিয়ে এসেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে দেশে বিদেশে ব্যাপক আরোলোড়ন সৃস্টি হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনিদিষ্ট অভিযোগ থাকায় সংশ্লিষ্ট দেশ তাদের পাসপোর্ট দেয়নি। এসব তথ্য নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে নিজের একার জন্য মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন শাহীন সিদ্দিক। ওই সময় বিনিয়োগের মাধ্যমে মাল্টার পাসপোর্ট দেওয়ার কাজটি করত হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে শাহীন সিদ্দিক প্রচ্ছায়া নামের একটি কোম্পানির নামে ঢাকার মূল্যবান সরকারি জমি কুক্ষিগত করা তথ্য পায়। আর শাহীন তার পাসপোর্টের উল্লেখ করে বলেছিলেন, তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান। আর এই কারণে তাকে পাসপোর্ট দেয়নি প্রতিষ্টানটি।
প্রথমবার প্রচ্ছায়ার কথা উল্লেখ করায় পাসপোর্ট না দেওয়ায় ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বারের আবেদনে শাহীন সিদ্দিক দাবি করেন চট্টগ্রামের দ্য আর্ট প্রেস নামের একটি কোম্পানির পরিচালক তিনি। যেটি ১৯২৬ সালে তার বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এই কোম্পানি নিয়ে সন্তষ্ট না হওয়ায় তাকে ও তার মেয়েকে ওই সময় আর পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, শাহীন ও তার মেয়ে বুশরা ২০১৫ সালে পাসপোর্ট পেতে যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার পাউন্ড লাগত। এরসঙ্গে ফি হিসেবে আরও ৭০ হাজার পাউন্ড নিত হেনলি। আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন কুয়ালামপুরের একটি ব্যাংকে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার দেখিয়েছিলেন। ১১ বারে এই অর্থ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল। তবে এসব অর্থের উৎস কী ছিল সেটি স্পষ্ট নয়।
বুশরা লন্ডনে পড়াশোনা শেষে জেপি মর্গান ব্যাংকে কয়েকদিন চাকরি করেন। এরপর চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৮ সালে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরোতে পাঁচ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। এই অর্থও তাকে তার বাবা-মা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পতনের পর গত অক্টোবরে তারিক জামিল সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে আইন আছে তা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি বিদেশে নিতে পারবেন না।
আ. দৈ./ কাশেম
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, 
সর্বশেষ সংবাদ
সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করল বিএসএফ
ইসিকে সরঞ্জাম সহায়তা দেবে ইউএনডিপি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি রোববার
বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের
নব্য দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা জামায়াত আমিরের
ফরিদপুরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতারা গন সংযোগে ব্যস্ত
চায়না পোশাকে সয়লাব দেশ
দুদকের মামলায় বিএফআইইউয়ের মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার
দক্ষতা ও নিষ্টার পুরস্কার, দুদকের মহাপরিচালক-পরিচালক পদে পদোন্নতি
রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে: সালাউদ্দিন
