ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্যসেন হলে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। গত রোববার ( ২৯ ডিসেম্বর ) হলের ক্যান্টিন বয়, ক্যাফেটেরিয়া কর্মী, এবং দোকানের কর্মচারীদের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ করেছে সংগঠনটি। শীতের তীব্রতায় যখন শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে, তখন এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
এই কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী এবং মাস্টার দা সূর্যসেন হলের ৪র্থ বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. রাকিব ইসলাম। তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের অন্যান্য কর্মী মো. লিমন মেজর, মানসুর আহমেদ, তরিকুল ইসলাম (১ম বর্ষ), সোহান (১ম বর্ষ), এবং ইব্রাহিম (১ম বর্ষ)। তারা একত্রে এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করেন। শীতবস্ত্র বিতরণের সময় রাকিব ইসলাম জানান, ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে ভালো কাজ করার এবং সাধারণ ছাত্রদের মন জয় করার একটি ইতিবাচক বার্তা দিতে চায় ছাত্রদল।
রাকিব বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থেকেছে। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। আমাদের সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য শুধু রাজনীতি করা নয়, বরং মানুষের কল্যাণে কাজ করা।”
তিনি আরও বলেন, “দেশপ্রেমিকরা কখনো দুর্নীতিগ্রস্ত হতে পারে না। তবে বর্তমানে রাজনীতিতে দূর্নীতিবাজদের প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ দেশপ্রেমিকরা রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের উচিত রাজনীতিতে আগ্রহী হওয়া এবং নিজ দায়িত্বে এই অঙ্গনে অংশগ্রহণ করা। এটি তাদের দেশের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রমাণ বহন করে। দুর্নীতিবাজদের জায়গা দিতে দিতে যুব সমাজ আর কতদিন নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের নাটক করবে?”
সূর্যসেন হল ছাত্রদলের এই উদ্যোগ শুধু কর্মচারীদের মধ্যে নয়, হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝেও ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তারা মনে করেন, এ ধরনের কার্যক্রম ছাত্ররাজনীতির প্রতি মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ছাত্রদলের এই উদ্দ্যোগ সম্পর্কে হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ছাত্ররাজনীতি যদি এমন জনকল্যাণমূলক কাজে নিবেদিত হয়, তাহলে সাধারণ ছাত্রদের কাছেও এটি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের কষ্ট লাঘবে কাজ করা ছাত্ররাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হওয়া উচিত।”
ছাত্রদলের এই ধরনের উদ্যোগ ছাত্র রাজনীতিতে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। ছাত্র রাজনীতির পরিচিত চিত্র যেখানে হিংসা বা সংঘাতের কারণে কলুষিত, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়াঙ্গনে রাজনৈতিক দলগুলোর এই ধরনের জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ ছাত্ররাজনীতিকে নতুন করে ভাবতে শেখাচ্ছে।
আ.দৈ./এস এইচ এস