শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিদেশে অর্থ পাচার এবং বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় অবৈধ সম্পদ অর্জন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অর্থ পাচার ও আতমসাৎ সংক্রান্ত অপরাধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২ ও ৩) ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ / গতকাল বুধবার (০১ জানুয়ারি) ঢাকায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেন । গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন পূর্বক দখলে রেখে এবং ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৬৬৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।
এছাড়া বিবাদী ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ টাকা জমা ও ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০৮ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
দুদকের সূত্র মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।ছাত্র জনতার অন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের হয়।এরপর গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করার কথা জানায় পুলিশ। ওইদিনই তাকে কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আওয়ামী লীগের আমলে পর পর তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে বিজয়ী হন । ২০১৪ সাল থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
অভিযুক্ত সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশে তার রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা তৎসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
আ. দৈ. /কাশেম