ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) লোপাটের উৎসব চলছে। পুরনো সিন্ডিকেট আবর সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এমন কোন স্থান নেই যেখানে এই সিন্ডিটের হিংস্র খাবা লাগেনি।ডিএনসিসির বর্তমান প্রশাসকের দপ্তরের নাম ভাঙ্গিয়ে তার পিএস, সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ,প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার দপ্তর, নগর ভবনে সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও ক্রয় ও ভান্ডার কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন এবং বহিরাগতদের নিয়ে পরিচালিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট পুরো প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে বিণ্নি গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোটি কোটি টাকায় নিম্মমানের অকিটরিসহ কেনা কাটাসহ, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ, পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, পদায়ন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের চাকরি স্থায়ী করণ, পোষ্য কোটায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিয়োগে মোটা অংকের বাণিজ্য হয়েছে। বর্তমানে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের চাকরি স্থায়ী করণ এবং রাজস্ব বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগে কর্মকর্তাদের নিয়োগে মোটা অংকের বাণিজ্য চলছে।
এই সিন্ডিকেট টি দীর্ঘদিন যাবৎ ডিএনসিসিতে নানা অনিয়ম,দুর্নীতি,ক্ষতার অপব্যবহার,কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লোপাট ও অবৈধভাবে পুররো নগীতে অস্থায়ী কোন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে গুলশানে, বনানী কাঁচাবাজার মার্কেট ভবনের দেয়াল ঘেঁষে অস্থায়ী দোকান বরাদ্দের নামে কয়েক কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। উত্তরা থেকে শুরু করে গুলশান, বনানী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেটসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাত অস্থাীয় বরাদ্দ দিয়ে ইতোমধ্যে কয়েক শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ডিএনসিসির প্রশাসকের দপ্তরের নাম ভাঙ্গিয়ে শুরু থেকেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে বর্তমান প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা ফি স্টাইলে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনতা করেছেন। তারা কথায় কথা প্রশাসকের নাম ব্যবহার করেন।
ফুটপাত বরাদ্দে রাজস্ব বিভাগের মার্কেট শাখার মতামত পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। তাদের মতামত ছাড়াই অবৈধভাবে দোকান বরাদ্দ সম্পন্ন করছেন। ফলে অগ্নিকান্ডের মারাত্নক ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে ওই মার্কেট ভবন। এসব দেখার যেন সরকারের কেউ নেই। এসব বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান ‘আজকের দৈনিক প্রত্রিকাকে’ বলেন, রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজার ভবনের দেয়াল সংলগ্ন তিন পাশে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।আগের দোকানীদের কাছ থেকে বকেয়া ভাড়ার টাকা নিয়ে তাদেরকে বরারদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসকের ইচ্ছায় দোকান বরারদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আর অস্থায়ীভাবে দোকান বরাদ্দের বিষয়ে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও বাজার সার্কেলের মতামতের প্রয়োজন হয় না।
ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের দপ্তরের সিন্ডিকেট প্রথমে কিছু টাকা নিয়েছেন, পরে বাকি টাকা না পেয়ে ফুটপাত থেকে ওইসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেন। এমনকি অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে অবৈধ দোকান বরাদ্দ চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সিন্ডিকেট ওই সময় সফল হয়নি। ? এদিকে গত বছর ৫ আগস্ট ‘পট পরিবর্তনের’ পরে বর্তমান প্রশাসকের আমলে তার পিএস ’র নেতৃত্বে আগের সিন্ডিকেট নতুন ভাবে পুনরগঠন করা হয়। এরপরই নগরীতে ফুটপাত অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া শুর হয়।
এই প্রসঙ্গে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা বলেন, তখন মেয়র আতিক ফুটপাতে দোকান বরাদ্দ দিতে চাননি। এখন প্রশাসক চাচ্ছেন তাই হচ্ছে। অবৈধ লেনদেনের বিষয়টি তিনি এরিয়ে যান তিনি।
এসব বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামন এই প্রতিনিধিকে বলেন, লোক নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতিতে অবৈধ লেনদেনের সাথে তিনি জড়িত না। এছাড়া তিনি কথিত সিন্ডিকেটের সাথেও জড়িত না। একটি মহল তার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করছেন। অথচ অভিযোগ উঠেছে, তার দপ্তরেরে টাকা ছাড়া কোন নথি উপস্থাপন করা হয় না। এমনকি তিনি নিজে সব ধরনের নথিপত্র আটকে রাখেন এবং প্রশাসকের দপ্তরের কথিত সিন্ডিটের সাথে গোপনে যোগাযোগ রাখেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, ডিএনসিসিতে বাজার সার্কেলের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতামত ছাড়াই কেনো অবৈধভাবে এসব দোকান বরারদ্দ দেওয়া হচ্ছে। লোক নিয়োগের সাথে তিনি জড়িত না। এছাড়াও কোন সিন্ডিকেটর সাথে তিনি জড়িত না। প্রয়োজেনে তদন্ত করা হোউক, তদন্তেই বেরিয়ে আসবে কারা জড়িত । অথচ ডিএনসিসির এই সিন্ডিটেকের সাথে তিনি জড়িত বলে, 'টপ টু বটম' কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুখে আলোচনায় রয়েছেন।
অপরদিকে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এই প্রতিনিধিকে আলোচিত নানা অনিয়ম,লোপাট, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব এবং কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য প্রসঙ্গে বলেন, আপনারা তথ্য দেন। আমি অবশ্যই অ্যাকশনে যাবো। এর বেশি তিনি আর কোন কথা বলতে রাজি নন।
আ দৈ./কাশেম