‘জয় বাংলা’-কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় স্থগিতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা’ শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্লোগান নয়। এই স্লোগান দিয়েই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
হানিফ বলেন, ৬৬ এর ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ সবই হয়েছিল ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে ধারণ করে। রণাঙ্গনে এই স্লোগান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতো, উজ্জীবিত করতো। যেই স্লোগান শুনে এখনো স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষের মনে শিহরণ জাগে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, একমাত্র পাকিস্তানের আদর্শে যারা অনুপ্রাণিত ছিল, তারাই এই স্লোগানটি অপছন্দ করতো। এই স্লোগান তাদের মনে আতঙ্ক ছড়াতো। এই স্লোগান নিষিদ্ধের জন্য পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসীরা অনেকবারই চেষ্টা করেছে। এই স্লোগান বাতিলের রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো এই বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানি আদর্শের জঙ্গিদের হাতে জিম্মি। এই বাংলাদেশ এখন আর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী কোনো সরকারের হাতে নেই।
তিনি বলেন, গত ৪ মাসে আমরা লক্ষ্য করেছি এই সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। জনকল্যাণকর কোনো কাজ বা আইন করেননি, দেশের উন্নয়নমূলক কোনো কর্মকাণ্ড হাতে নেয়নি। বরং তাদের সমস্ত আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা, স্বাধীনতার ইতিহাসকে মুছে ফেলার দিকে, দেশকে জঙ্গিবাদের আস্তানা বানানোর দিকে। ড. ইউনূসের ঘোষিত রিসেট বাটন পুশের মাধ্যমে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টাটাই দিন দিন আরো স্পষ্ট হচ্ছে। এই রায়ের বিরূদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ। এর ফলে আপাতত ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে গণ্য হবে না।
আ. দৈ/ আফরোজা