সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫,
২ আষাঢ় ১৪৩২
ই-পেপার

সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
শিক্ষা
বিরূপ পরিস্থিতির প্রভাব, স্কুলে যেতে অনিচ্ছুক ৩৭% শিশু, জরিপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
Publish: Monday, 9 December, 2024, 4:32 PM  (ভিজিট : 153)

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস পরিস্থিতি, কোভিড মহামারীর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের প্রাথমিক স্তরের ৫৫.২ শতাংশ শিশু ভীত বা আতঙ্কগ্রস্ত  হয়ে পড়েছে বলে গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গবেষণায় জানা গেছে।

আর ৩৬.৯ শতাংশ শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুল বিমুখতা  তৈরি হয়েছে।

আজ সোমবার ( ৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন আমাদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সভায় বলা হয়েছে, জরিপে উঠে এসেছে ৩৬.৫ শতাংশ শিশু শিক্ষার্থী পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে, ২৮.৬ শতাংশ মানসিক ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং ৭.৯ শতাংশ শিশুর মেজাজ হয়েছে খিটখিটে।

গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আয়োজিত সভায় প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা।

জরিপের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে প্রতিষ্ঠান দুটি বলছে, প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের সর্বমোট ২০৩টি সহয়তা সংগঠনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নিয়ে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে।

একই সাথে ১২টি আলোচনা, মতামত সংগ্রহ এবং বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে মোট ৪টি সভার মাধ্যমে এ মতামত নেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে জরিপের ফল তুলে ধরেন টিচার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক ও গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থপক আব্দুর রউফ।

জরিপ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ছেড়ে রাস্তায় নামা, মিছিল, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারামারি দেখা, রাজপথে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ার দৃশ্য দেখা বা শোনা, স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কারফিউ-অবরোধ কর্মসূচির কারণে ঘরে থাকার ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে।

এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের 'ট্রমা' দেখা দিয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিবর্তনের ফলে স্কুলে না যাবার প্রবণতা ও পড়ালেখার প্রতি অনীহা বেড়েছে।

এছাড়া ভয়-ভীতিতে থাকা, ঘুমের সমস্যা হওয়া ও দুঃস্বপ্ন দেখা, বিষণ্ণতা ও হতাশাগ্রস্ত হওয়া, মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা দেয়া বা সহিংস আচরণ করা, পাঠ্যবই বা কারিকুলামে পরিবর্তন নিয়ে ভীত হবার মত প্রভাবও লক্ষ্য করা গেছে।

শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও খবর দেখে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। 

তাদের মধ্যে শিশুসুলভ চঞ্চলতা হারিয়েছে বা একাকীত্ববোধ সৃষ্টি হয়েছে এবং বন্যার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি বেড়ে যাবার হার বেড়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।

সভায় জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য এবং শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, কোভিডের আগে যে শিক্ষাক্রম সংস্কার করা হয়েছে, তাতে শিক্ষার অংশীজনদের মতামত নেয়া হয়নি। এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর পড়েছে।

শিক্ষায় দ্রুত পরিবর্তন ‘সম্ভব নয়’ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের মায়েরাও শিক্ষক। সেজন্য শিশুর সঠিক শিক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনে অভিভাবকদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

এসব সংকট কাটাতে 'স্কুলে স্কুলে সাংস্কৃতিক চর্চা' বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রাথমিকের শিক্ষক নেতা শাহিনূর আল আমিন।

আরেক শিক্ষক নেতা আবুল কাশেম স্কুলগুলোতে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করার কথা তুলে ধরে বলেন, যেসব স্কুলে খেলার মাঠ নাই, কিন্তু জমি আছে সেগুলো সংস্কার করে খেলার মাঠ স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

এছাড়াও জরিপে আরও কিছু ফলাফল ও সমস্যা সমাধান বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী।

সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতের জন্য তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হবে। 

সেজন্য আমরা মতবিনিময় সভা থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরব, যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সামাজিক পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন।

চলতি মাসেই ১০টি দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ স্কুলগুলো আলাদা আলাদাভাবে সাজানো হয়েছে। 

এছাড়াও আমরা বিদ্যালয়গুলো সাজানোর কাজও আমরা করছি। এগুলো শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কাজ করবে।

সভায় বক্তব্য রাখেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ, ব্র্যাক শিক্ষা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র এডভাইজার ড. মুহাম্মদ মুসা। 

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী।


আ. দৈ/ সাম্য
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতে ১৫০ পর্যটক নিয়ে ভেঙে পড়ল সেতু, স্রোতে ভেসে গেছেন অনেকে
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২৪৯
ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিরোধে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান
কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় ও দক্ষিণখানের কাওলায় রাজউকের মোবাইল কোর্ট
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন: ইশরাক
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

আগতাড়াইল মানব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপহার সামগ্রী বিতরণ
ঢাকা উত্তরের কৃষকদল নেতা রাফেলসহ কয়েকজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
‘আমার বুড়ো বাপকেও তুই ছাড়িসনি’ বলে আওয়ামী লীগ নেতাকে গণধোলাই
ডিএনসিসির উত্তরায় দিয়াবাড়ি কোরবানির পশুর হাটের বর্জ্য এখনো পড়ে রয়েছে
বিমান বিধ্বস্তে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেন এক যুবক
শিক্ষা- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মাসুদ আলম

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik$gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝