বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্থাপিত হলেও আজও হয়নি এ" গ্রেডের স্টেশন। ফলে এই স্টেশনে নেই ডুবুরী দল। দুর্ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা রোধ করতে ডুবুরী দল আনতে হয় রাজশাহী থেকে।
এ জেলায় ডুবুরি দল না থাকায় গত পাঁচ বছরে শুধুমাত্র পানিতেই ডুবে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে দুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে চলছে। সিরাজগঞ্জের ডুবুরি দল না থাকায় ২০২৪ সালের ৮ জুলাই সিরাজগঞ্জ সদর ও চৌহালী উপজেলায় বর্ষার পানিতে ডুবে দুই শিশু ও এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ২ জুন উল্লাপাড়াউপজেলার ত্রিফলগাঁতী গ্রামের মিলন ও ২৫ অক্টোবর যমুনা নদীতে গোসল করতে নেমে জিহাদ নামের এক স্কুল ছাত্রর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে অফিসসূত্রে জানা যায় ১৯৬৬ সালে সিরাজগঞ্জ সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপিত হয়। এই জেলার ৭৫টি উপজেলায় স্টেশন অফিসার সংকট নিয়ে চলছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কাজ। সদর ও রায়গঞ্জ ব্যতীত কোন উপজেলাতে নেই স্টেশন অফিসার। জেলার সদর ও রায়গঞ্জ 'বি' শ্রেণিভুক্ত স্টেশনগুলিতে রয়েছে দুইটি পানির গাড়ি এবং বাকি সব 'সি' শ্রেণিভুক্ত স্টেশনে রয়েছে একটি পানির গাড়ি। জেলা পর্যায়ে মোট জনবল রয়েছে ১৮০ জন ৭টি উপজেলায় নেই স্টেশন অফিসার ।
প্রতিনিয়ত সিরাজগঞ্জ জেলায় পানিতে ডুবে মানুষ মারা যাওয়ায় সিরাজগঞ্জ সদর ফায়ার স্টেশনটি প্রথম শ্রেণীর করে ডুবুরি দল সংযুক্ত করার আন্দোলন করে চলছে শিক্ষার্থীরা। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, অফিসার মো. আতাউর রহমান বলেন, সদর স্টেশনটি জন্মলগ্ন থেকেই 'বি' শ্রেণিভুক্ত। সিরাজগঞ্জ জেলাটি নদীমাতৃত্ব জেলা চারদিকেই রয়েছে যমুনা নদী যে কারণে এই জেলায় প্রতিনিয়ত পানিতে ডুবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আমরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি 'এ' শ্রেণিতে উন্নীতও জেলা পর্যায়ে ডুবুরি দলের জন্য দফায় দফায় আবেদন দিচ্ছি অধিদপ্তরে।
বর্তমানে আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, সিরাজগঞ্জে প্রায় সময় পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর আমরা পাই। পানিতে ডুবে কেউ হারিয়ে যায় তখন ডুবুরির জন্য বসে থাকতে হয়। কারণ সিরাজগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসে কোনও ডুবুরি নেই। আমরা সিরাজগঞ্জের সদর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি দ্রুত প্রথম শ্রেণীর ঘোষণা চাই। সেই সাথে প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল চাই। যাতে আর কোন বাবা- মায়ের কোল খালি না হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, ডুবুরি দলের পদ কেবল বিভাগীয় পর্যায়ে আছে। সদর উপজেলাতে নেই। যখন আমাদের ডুবুরি দলের প্রয়োজন হয়, তখন রাজশাহীতে আমরা খবর দিই। তারা এসে উদ্ধারকাজ করে। জেলা পর্যায়ের ডুবুরি দলের জন্য অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আ. দৈনিক/ কাশেম/ নজরুল