বহুল আলেচিত স্বাস্থ্যখাতে লাগামহীন দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে দুদকের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। মিঠু র বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দূর্নীতির মাধ্যমে প্রায় শতাধিক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে,গতকাল বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে থেকে ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি , আত্মসাৎ ও বিদিশে অর্থপাচার এবং ৭৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর গতকাল বুধবারই তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়।
দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইস ও টেকনোক্রেট নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিঠু কৃষিজমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণে মোট ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী মিলিয়ে আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ তার নামে পাওয়া গেছে। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
এছাড়া মিঠুর নামে পারিবারিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ সম্পদ ও ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে অনুসন্ধানে বৈধ উৎস পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। অর্থাৎ বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলেছে।
২০১৬ সালে প্রকাশিত বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে নাম আসে মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর। অভিযোগ রয়েছে, তার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ ও উন্নয়নকাজের নামে প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন।
আ. দৈ./কাশেম