এ বছর প্রায় ১৫ হাজার এসএসসি শিক্ষার্থীর ফল গণনায় ভুল হয়েছে। এ জন্য শাস্তি পেতে যাচ্ছেন ২ শতাধিক পরীক্ষক। বর্তমানে ফল পুনর্নিরীক্ষণে শুধু প্রাপ্ত নম্বর গণনা হয়, খাতা পুনর্মূল্যায়ন হয় না। এতে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীও যথাযথ মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হয় বলে মনে করছেন গবেষকরা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৬ জন। কেবল উত্তীর্ণ থেকেও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ পরীক্ষার্থী। এছাড়া ফেল থেকেও পাস করেছে ২৯৩ জন।
এ বছর সারাদেশে ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, বোর্ড পরীক্ষায় এ ধরণের গাফিলতি খুবই দুঃখজনক। তাদের প্রশ্ন, এসব শিক্ষার্থীদের যে মানসিক ক্ষতি হয়েছে তার দায়ভার নেবে কে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ‘কেবলমাত্র কাউন্টিংয়ের মধ্যেই এটা। এর বাইরেও তো আছে। দেখেন, কতটা অবহেলা বা অবজ্ঞা নিয়ে আমরা অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম বা শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে পরিচালনা করছি।’
ফল পুনর্নিরীক্ষণে শুধু প্রাপ্ত নম্বরের যোগ ঠিক আছে কিনা তা দেখা হয়। খাতা নতুন করে আর মূল্যায়ন হয় না।একজন পরীক্ষক খাতা পরীক্ষার পর তা নিরীক্ষা করেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আরেকজন শিক্ষক। এরপর তা জমা দেওয়া হয় প্রধান পরীক্ষকের কাছে। তারও এটি নিরীক্ষা করার নিয়ম। শিক্ষা গবেষকদের মতে, বোর্ড পরীক্ষার খাতা নিরীক্ষায় তৃতীয় পরীক্ষকও রাখতে হবে।
অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে ১০টি বিষয়ের মধ্যে ৭টা বা ৮টাতে সে ভালো করেছে, কিংবা ৯টাতে কোনো সময় ভালো করেছে। ১টাতে সে ফেল করেছে। তাহলে তো আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় যে এটা অসম্ভব বিষয়। এই বোধটা তো বোর্ডেরও থাকা উচিত।’
গাফিলতির অভিযোগে দুই শতাধিক পরীক্ষক চিহ্নিত করে তাদের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছে শিক্ষাবোর্ড। আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘বোর্ডের উত্তরপত্র মূল্যায়ন, প্রশ্ন প্রণয়ন—যতকিছু বোর্ড থেকে আউট, বোর্ডের কোনো কাজে তাদের আর সংশ্লিষ্ট করা হবে না।’
খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য বোর্ডের আইন সংশোধনে সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে শিক্ষাবোর্ড।