মৌলিক সংস্কার না করেই নির্বাচন করা যায়, কিন্তু তাতে গণতান্ত্রিক উত্তরণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
আজ শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ীতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সুজন আয়োজিত রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সুজনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।
সংলাপে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলোকে দুই ভাগে করা হয়েছে। কতগুলো সংস্কার আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে করা যাবে। রাজনীতিকদের এ ব্যাপারে দ্বিমতের সুযোগ খুব কম। শত শত সুপারিশ আছে, যেগুলো বাস্তবায়ন করা যায়। আর কতগুলো সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য দরকার। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মৌলিক সংস্কার না করে নির্বাচন করা যাবে, কিন্তু তাতে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটবে না। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে এ সময় মত দেন সুজন সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় যাতে কেউ সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে, সে জন্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার লাগাম টানতে হবে। প্রতিষ্ঠানে সঠিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া না গেলে সব পণ্ডশ্রম। ইতিমধ্যে ১০টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। বাকি বিষয়গুলোতেও ঐকমত্য হবে।’
সাবেক বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় সনদ তৈরি করছি, এটা যদি কেউ না মানে তাহলে কী হবে? আমার মনে হয়, এটার মধ্যে একটা বিধান থাকতে হবে যাতে বলা থাকবে, এই সনদের বিরুদ্ধে কোনো আইন হবে না।’
সংলাপে নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে জাতীয় ঐকমত্য দেখিনি। এবার যদি ঐকমত্য হয় এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে গণ-অভ্যুত্থান আর দেখতে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকলে একরকম, ক্ষমতার বাইরে গেলে আরেক রকম। দলগুলোকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে দেখা যায়নি। আমরা আশা করি, এবার দেশের স্বার্থে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হবে।’
সংলাপ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনুভা জাবিন প্রমুখ।