ইসরাইলীর হামালায় ধ্বংস স্তূপে থাকা গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ক্ষুধাত্ব হুড়োহুড়ি ও শ্বাসরোধে অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে খান ইউনিসে অবস্থিত বিতর্কিত জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুসারে, হতাহতদের বেশিরভাগই খাদ্য সংগ্রহে জড়ো হওয়া অসহায় সাধারণ মানুষ। তারা বলেছে, এই প্রথমবার ত্রাণকেন্দ্রে হুড়োহুড়ি ও শ্বাসরোধে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত এই বেসরকারি সংস্থা জিএইচএফ দাবি করেছে, ঘটনাটি সৃষ্টির জন্য হামাস-সংশ্লিষ্ট অস্ত্রধারী কিছু ব্যক্তি দায়ী। তারা বলেছে, জনতার মধ্যে অস্ত্রধারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এক মার্কিন ঠিকাদারকে বন্দুক দেখিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়। জিএইচএফ জানায়, অন্তত ১৯ জন পদদলিত হয়ে এবং একজন ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তবে এসব অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শীরা জিএইচএফ-এর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি বলেছেন, একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন, সেখানে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এতে বিশৃঙ্খলা শুরু হয় এবং তাতে পদদলিত হয়ে অনেক মানুষ আহত হন। গাজার নাসের হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ক্ষুধার্ত মানুষজন ত্রাণের জন্য ছুটে যাচ্ছিলেন, কিন্তু প্রধান ফটকটি বন্ধ ছিল। ফলে চাপ ও বিশৃঙ্খলা বেড়ে যায়।
ইসরায়েলি অবরোধে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানি ও ওষুধ সংকট চরমে। আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর একাংশ বারবার সতর্ক করে বলেছে, বহু মানুষ অনাহারে আছে। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণে জটিলতা, অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ গাজাবাসীর দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
অন্যদিকে, জিএইচএফ সম্প্রতি ইসরায়েলি ও মার্কিন সহায়তায় গঠিত হলেও এর কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনা চলছে। অনেকেই মনে করেন, এই সংস্থাটি প্রকৃত মানবিক চাহিদার পরিবর্তে ইসরায়েলের একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
আ. দৈ./কাশেম