ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রস্তাবিত প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ‘স্ববিরোধী ও অশোভন’ আখ্যা দিয়েছে । ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী এবং একটি সভ্য রাজনৈতিক পরিবেশে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।
শনিবার (৫ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক শেখ ফজলুল করীম মারুফ বলেন, 'পিআর পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদ যেভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আক্রমণ করেছেন, তা রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ লঙ্ঘনের শামিল।'
তিনি বলেন, বিএনপি যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, সেই দলই ২০১৩-১৪ ও ২০১৯ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং নির্বাচিতও হয়েছে। চট্টগ্রামের শাহাদাত হোসেন ও ঢাকার ইশরাক হোসেন আওয়ামী লীগের অধীনে হওয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এখন সেই বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা পিআর পদ্ধতি নিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে সমালোচনা করলে তা নিজেদের কথার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায়।
বিবৃতিতে সালাহউদ্দিনের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। শেখ ফজলুল করীম মারুফ বলেন, 'যখন তিনি ‘গুম’ হওয়ার দাবি তুলেছিলেন, তখন তিনি ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছিলেন। গুম ইস্যুতে কমিশনে মামলা না করে পরে চাপের মুখে মামলা দায়ের করেন, যা তার অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।'
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, 'সালাহউদ্দিন আহমেদকে তার বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধ্বংসের দায় তাকেই নিতে হবে। বিএনপিকেও এমন স্ববিরোধী মন্তব্যকারী নেতার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে দল ও দেশের রাজনীতিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়।'
তিনি আরও বলেন, মতপার্থক্য গণতান্ত্রিক রাজনীতির স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু তা প্রকাশ করতে হবে যুক্তিসংগত ও মার্জিত ভাষায়। 'সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য শুধু অশোভন নয়, তা বিএনপির নিজস্ব অবস্থানকেও দুর্বল করেছে,' বলেন মারুফ।
বিবৃতির শেষাংশে তিনি বলেন, 'যদি আমরা সত্যিকার অর্থে একটি নতুন, সভ্য বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে পুরনো অসভ্য রাজনৈতিক চর্চা থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তিনির্ভর আলোচনা ও দ্বিমতের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।'
আ.দৈ./কাশেম