অন্তর্বর্তী সরকারেরপ্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক শুরু হয়েছে।আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় লন্ডনের পার্ক লেনের হোটেল ডোরচেস্টারে এ বৈঠক শুরু হয়।
সেন্ট্রাল লন্ডনের পার্ক লেনের ছয় তারকা ডরচেস্টার হোটেলে দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির এই ‘ওয়ান টু ওয়ান’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এর আগে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় যুক্তরাজ্যের কিংস্টন এলাকার নিজের বাসা থেকে ডরচেস্টারের উদ্দেশে বের হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলের বরাত দিয়ে সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির জানান, তারেক রহমান বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
এদিকে ড. ইউনূস ও তারেক রহমান যে হোটেলে বৈঠক করবেন সেখানে অবস্থান নিয়ে বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীরা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ বৈঠক বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সঙ্গত কারণেই এ বৈঠক নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। সবার দৃষ্টি এখন লন্ডনে নিবদ্ধ।
জানা গেছে, সরকারের চাওয়া অনুযায়ী বৈঠকটি হচ্ছে। লন্ডনস্থ বিএনপি নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠক কেন্দ্র করে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। বৈঠক চলাকালে হোটেলের নির্দিষ্ট কক্ষের আশপাশেও কারও অবস্থান না করার বিষয়ে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। বৈঠকে দুই নেতার জন্য নাশতার ব্যবস্থা থাকছে। বৈঠকের পর দুই পক্ষের তরফেই সাংবাদিকদের ব্রিফ করার কথা রয়েছে।
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে বেশ আশাবাদী বিএনপি। এই বৈঠকের পর জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকতে পারে দলটি। সেখানে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে পারে দলটি। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আলোচনা ফলপ্রসূ হলে পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি; তা না হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবিতে মাঠে নামার ঘোষণা দিতে পারে দলটি।
তবে দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র জানিয়েছে, ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা যাই হোক, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরতে পারেন। কেউ কেউ ধারণা করছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বছরপূর্তি আগামী ৫ আগস্টের আগেই তিনি দেশে ফিরতে পারেন। তবে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, তারেক রহমান এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলের নেতা এবং অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। তারা যখন বসবেন, তখন বাংলাদেশের এখনকার যে কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। আলোচনায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় নির্বাচন, জুলাই চার্টার (জুলাই সনদ) এগুলোর যে কোনো বিষয়ে আলাপ হতে পারে।