জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, “জুলাই সনদে কী অন্তর্ভুক্ত হবে এবং কী হবে না, সে বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আয়োজনে দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু হয়। এই আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ।
সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, “কমিশনের পক্ষ থেকে পূর্বে যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর ওপর বিভিন্ন দল ও অংশীজনদের প্রতিক্রিয়া ও মতামতের ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। যেসব বিষয়ে দলগুলোর অবস্থান প্রায় কাছাকাছি অথবা সামান্য আলোচনায় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব, সেগুলো নিয়ে এবার সম্মিলিতভাবে আলোচনা করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “পৃথকভাবে না গিয়ে সম্মিলিতভাবে যুক্তির মাধ্যমে মতামত শোনা গেলে অবস্থানগত পরিবর্তন আসতে পারে, সেই বিবেচনায় আজকের এই আলোচনার আয়োজন।”
আলোচনার কাঠামো ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “তিন-চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আমরা জানি সব বিষয়ে একমত হওয়া যাবে না, কিন্তু কিছু বিষয়ে অন্তত ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে—কারণ আমাদের সময় সীমিত। জুলাই মাসেই ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ রচনার কাজ শেষ করতে হবে। ফলে এখনই নির্ধারণ করতে হবে, কোন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে, কোনটি হবে না।”
ড. রিয়াজ আরও জানান, পূর্বের সুপারিশগুলোর ভিত্তিতে যেসব পরিবর্তন এসেছে, সেগুলো সম্পর্কেও অবহিত করা হবে। সেই পরিবর্তনের আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ সুগম হবে।
তিনি বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা যেন এক জায়গায় পৌঁছাতে পারি—সেটা ন্যূনতম সম্মতির জায়গা হলেও চলবে। পরে রাজনৈতিক দলগুলো চাইলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাড়তি প্রস্তাব যোগ করতে পারবে। কিন্তু একটি ভিত্তি থাকা জরুরি, যা সংবিধানে প্রতিফলিত হতে পারে।”
প্রসঙ্গত, ‘জুলাই সনদ’ হচ্ছে চলমান গণপরিবর্তনের রূপরেখা নির্ধারণের একটি ঐতিহাসিক দলিল, যেখানে নতুন সংবিধান, রাষ্ট্রীয় সংস্কার, প্রশাসনিক ভারসাম্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও জনগণের মৌলিক অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।