আওয়ামী লীগের দোসর এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল ও তার পর্ষদের দুর্নীতির কারণে ব্যাংকের নিরপরাধ ব্যক্তিরাও ফেঁসে যাচ্ছেন। এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমালসহ বেশ কয়েজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এতে বিপাকে পড়েছেন বেশ কয়েকজন নিরিহ নিরাপরাধ ব্যাংক কর্মকর্তা।
জানা গেছে, ২০২২ সালের মে-জুন মাসে এনআরবিসি ব্যাংকে পারভেজ তমাল চক্রের নানা অনিয়ম ও বহুমুখী দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংক লুটপাটের অভিযোগের তদন্তে নেমে সত্যতা পায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন। ব্যাংকটির বিভিন্ন সেক্টরে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, আদনানসহ পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যাংক কর্মকর্তা ফেঁসে যান। এর মধ্যে একজন ভুক্তভোগী মো. দেলোয়ার হোসেন। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হুকুমেই অধিনস্ত কর্মীরা কাজ করে থাকেন। এখানে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যা আদেশ দেন তাই তাদের করতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ইচ্ছার বিরুদ্ধেও বেআইনি কাজ করতে হয়। কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও চাকরির স্বার্থে তারা এসব এ কাজ করতে বাধ্য হন। কিন্তু যখন কোনো প্রকার সমস্যা হয়, তখন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নিরপরাধ লোকগুলো ফেঁসে যায়। পরে উর্ধ্বতনরা নানা কৌশলে পার পেয়ে গেলেও বিপাকে পড়েন নিরিহ কর্মচারিরা। তাই দুর্নীতি তদন্তকারিরা ঠিকভাবে যাছাই-বাছাই করলেই রাঘব বোয়ালেরা ধারা পড়বেন। রেহাই মিলবে নিরিহ কর্মকর্তাদের।
এনআরবিসি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, দেলোয়ার হোসেন ব্যাংকিং সেক্টরে একজন দক্ষ, সৎ ও সাদামাটা একজন কর্মকর্তা। তিনি ব্যাংকে থাকাকালীন সুনামের সাথে কাজ করেছেন। কর্ম সাফল্যের জন্য বহু পুরস্কার পেয়েছেন।
জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন দীর্ঘ ৩৪ বছর বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যাংকে চাকরি করেছেন। সিটি ব্যাংক , মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং এনআরবিসি ব্যাংকে তার বর্নাঢ্য ক্যারিয়ার রয়েছে। তিনি ১৫ বছরের অধিককাল শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ব্যবস্থাপনার প্রতিটি বছর ব্যাংক সফলতার জন্য বহু ক্রেস্ট, প্রশংসাপত্র পেয়েছে। শিল্পখাতে ও বাংলাদেশের রপ্তানিতে তার ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শত শত নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করেছেন। রপ্তানিখাতে রেখেছেন বড় অবদান। এনআরবিসি ব্যাংকের একটি কুচক্রি মহলের চক্রান্তের শিকার তিনি।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট দেলোয়ার হোসেন বলেন, কিছু অসাধু লোক বার বার মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করাচ্ছেন। তারা নানা রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘ ২০ বছর সিটি এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকে তিনি অনেক সাফল্য পুরস্কার অর্জন করেন। এনআরবিসি উত্তরা শাখায় ৭ বছর ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় ২৮ টি গার্মেন্টসের মাধ্যমে শুধু উত্তরা শাখায় ৮০% থেকে ৯০% রপ্তানি কার্য সম্পূর্ণ করেছেন বলেও জানান তিনি। এ জন্যও বহুবার পুরস্কৃতও হয়েছেন। তার সময় উত্তরা শাখায় খেলাপি ঋণ ছিলো না বললেই চলে। এখন হিংসা এবং আক্রোশের বসত বারবার একটি চক্র তার পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে অভিযোগ করে বলেন, এতে তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। কারণ সৎতার সাথে কাজ করতে গিয়ে কিছু অসাধু পরিচালকের ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কথা মতো কাজ করেননি। এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
র/আ