বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা দুই (পিও) তুহিন ফারাবি ও (কথিত ছাত্র প্রতিনিধি) ডা. মাহমুদুল হাসান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাজির হননি।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত এই দুই কর্মকর্তার হাজির হবার কথা ছিল। কিন্তু তারা দুদকের হাজির হননি এবং সময় চেয়ে আবেদনও করেননি। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থের বিনিময়ে তদবির, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনেক অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (২০ মে) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে এই বিষয়ে বলেন, তলবকৃত দুই ব্যক্তিকে দুদকো উপস্থিত হননি। এমনকি সময় বৃদ্ধির জন্য তারা কোনো আবেদনও করেননি। এটা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দুদকের পক্ষ থেকে। কিন্তু তারা যদি এ সুযোগ না নেন এটা তাদের বিষয়।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, তাদের অনুপস্থিতির কারণে দুদকের অনুসন্ধান থেমে থাকবে না। দুদকের আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলমান থাকবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ হলে দুদকের টিম তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দিবে। প্রতিবেদনের আলোকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১৫ মে তাদের তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। একই দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে ২১ মে এবং যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে চিঠি দেওয়া হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল উপদেষ্টাদের এপিএস ও পিওর দুর্নীতি অনুসন্ধান শুরু করার দাবি নিয়ে দুদকে আসে যুব অধিকার পরিষদ। মার্চ টু দুদক কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুদকে আসে। পরে দলটির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল দুদকে স্মারকলিপি জমা দেয়।
এ ছাড়া হাইকোর্টের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামও প্রায় একই ধরনের অভিযোগ দুদকে দাখিল করেন। অভিযোগে ওই দুজন ছাড়াও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (ছাত্র প্রতিনিধি) ডা. মাহমুদুল হাসানেরও নাম রয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন পদত্যাগ করেন। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পিও ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ২৫ এপ্রিল নিজের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের বিষয়ে দুদককে তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
অন্যদিকে, গত ২১ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। চলতি বছরে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজ কেনায় কমিশন বাণিজ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে তার নাম উঠে আসে।
আ. দৈ./কাশেম