দেশজুড়ে এক হাজার ২৭টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কোনো ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে—স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন তুলে ধরেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সোমবার (৫ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের ৩২২ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে নিবন্ধিত ১৫ হাজার ২৩৩টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার ১২৩টি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স নবায়ন করেছে। এর বিপরীতে লাইসেন্সহীন অবস্থায় পরিচালিত হচ্ছে এক হাজার ২৭টি প্রতিষ্ঠান। বাকি অধিকাংশের লাইসেন্সের মেয়াদও অনির্দিষ্ট বা নবায়নবিহীন।
সংস্কার কমিশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই বাস্তবতা দেশের স্বাস্থ্যখাতে নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার দুর্বলতা এবং আইনের প্রয়োগে শৈথিল্যকেই স্পষ্ট করে। এর ফলে রোগীর নিরাপত্তা যেমন হুমকির মুখে পড়ছে, তেমনি সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর আস্থাও প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
প্রতিবেদনে বেসরকারি খাতের লাইসেন্সিং ব্যবস্থার জটিলতা এবং প্রশাসনিক জটিলতার কথাও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, হাসপাতাল বা ক্লিনিক মালিকদের একাধিক সরকারি দপ্তরে ঘুরতে হয় অনুমতির জন্য। এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরস্পরবিরোধী চাহিদা মালিকদের বিভ্রান্ত করে তোলে।
এক পর্যায়ে উল্লেখ করা হয়, অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক থাকলেও লাইসেন্স পেতে দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত সময় লেগে যায়। পাশাপাশি অননুমোদিত অর্থের দাবির অভিযোগও রয়েছে, যা প্রক্রিয়াকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।
কমিশনের মতে, লাইসেন্স পেতে দীর্ঘসূত্রতা ও ক্রমবর্ধমান ফি ছোট ও মাঝারি ক্লিনিকগুলোর লাইসেন্স নবায়নে অনাগ্রহ তৈরি করছে। ফলে নিয়ন্ত্রণহীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান বেড়েই চলেছে।