আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তবে জাতীয় নির্বাচন এপ্রিলে মাস পার হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শনিবার (৩ মে) সকালে রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের জেলা ও মহানগর আমির সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর এবার প্রকাশে সারাদেশের জামায়াতের জেলা ও মহানগর আমিরদের নিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারিতে, মানে রোজার আগে। তবে যদি এ সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে, তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত না। কারণ এরপর কোরবানির ঈদ ও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য কাজ করছি। যেখানেই ভোগান্তি সেখানেই আমরা ছুটে যেতে চেষ্টা করি। জনগণের দায়িত্ব যেমন আছে, ঠিক তেমনি জনকল্যাণ মূলক দল হিসেবে জামায়াতের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি মনে করি। তাই আমরাও চেষ্টা করি সাধ্যমতো দেশের কল্যাণে কাজ করতে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছে সরকার। সংস্কারের যে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে, তা যদি গতিশীল করা এবং অংশীজনরা সহযোগিতা করলে, সরকার ঘোষিত সময়ে সংস্কারের পর নির্বাচন সম্ভব। এজন্য দুটি সময়কে আমরা উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারি মাস রোজা শুরুর আগে। যদি এ সময়ে সংস্কার এবং বিচার কাজ শেষ না হয়, তাহলে এপ্রিল মাস পার হওয়া উচিত নয়। কারণ এরপর কুরবানির ঈদ এবং ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘মাঝে মাঝে সরকারের কিছু উপদেষ্টা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করেন। এটা আমাদের বিস্মিত করে। তারা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ থেকে তাদের নিবৃত থাকতে হবে।’একটি সুষ্ঠু ও বস্তুনিষ্ঠ নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পেশিশক্তি ও কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হলে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে। এই পদ্ধতিতে অনেক দেশে নির্বাচন হয়।’
’ নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে কিছু সুপারিশ সরাসরি কোরআন বিরোধী বলে জানান জামায়াতের আমির। তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে দেশের পারিবারিক ব্যবস্থার ওপর বড় আঘাত লাগবে। কুরআন বিরোধী কমিটিকে বাতিল করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারকে এরইমধ্যে আমরা সতর্ক করেছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি। তিনি বলেন, ‘দেশের পারিবারিক ব্যবস্থার ওপর বড় আঘাত লাগবে নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে। এই কোরআন বিরোধী কমিটিকে বাতিল করতে হবে। সরকারকে এরই মধ্যে সতর্ক করেছি আমরা। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।’
জাতীয় স্বার্থে সবাইকে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো দল তাদের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। চাঁদাবাজিসহ সামাজিক অপকর্ম থেকে বিরত না থাকলে সেসব দলের প্রতি মানুষের ঘৃণা জন্মাবে।’
আ. দৈ. /কাশেম