আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের বিরুদ্ধে ৯০ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৫ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৫টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ৪ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় মহাপরিচালক আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ২১ অক্টোবর সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদকে রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি সিলেট-৪ আসনের পাঁচবার সংসদ সদস্য হয়েছেন ইমরান আহমদ। ২০১৮ সালে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরের বছর তাকে ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করা হয়।
ছাত্র গণআন্দোলনে পতন হওয়া সরকার দল আওয়ামী লীগের সাবেক ১৮ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক ২৩ সংসদ সদস্যসহ মোট ৪১ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। এর মধ্যে, একজন সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ। জন্মসূত্রে অবাঙ্গালী ও ভারতীয় নাগরিক ইমরান আহমদ। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের একবছর পর ১৯৪৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের আম্বালা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পরে রিফিউজি হয়ে তার পরিবার (পিতা-মাতা) সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ও বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশের সিলেট জেলায় আসে এবং ভারত ত্যাগী শরণার্থী হয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে তিনি ওই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।
তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। বর্তমানে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা। রিফিউজি আ.লীগ নেতা হয়েও ইমরান আহমদ সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ) আসন থেকে ৭ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ শাসনামলের তার শেষ ৩ নির্বাচন ছিল অনেকটা প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত।
ইমরান আহমদ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে তৃতীয় জাতীয় নির্বাচনে সর্বপ্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে ষষ্ঠবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ইমরান আহমদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেও তাকে কোনো মন্ত্রণালয় দেওয়া হয়নি। তবে এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন।
আ. দৈ./ কাশেম