রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বেসিক ও বিডিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) মেয়াদ শেষ না হতেই তাদের চুক্তি বাতিল করেছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জনতা ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. আব্দুল জব্বার-এর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মুরশেদুল কবীর, রূপালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বেসিক ব্যাংকের এমডি মো. আনিসুর রহমান ও বিডিবিএলের এমডি হাবিবুর রহমান গাজীর চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপসচিব আফসানা বিলকিস স্বাক্ষরিত এসব প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক পদে সম্পাদিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের জন্য সরকারের সুপারিশ অথবা সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো। ব্যাংক কোম্পানী আইন ও পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়ে পরবর্তী বিধিগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
জানা যায়, গত ১৫ বছরেও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো। এতে আর্থিকখাতকে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে সরকার দলীয় লোককে পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ দিয়েছে। এই নিয়োগের ফলে আর্থিকখাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির কারষে দেশের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পেড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় লোক নিয়োগ দিয়ে তাদের দলীয় লোক বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার করেছে। তাই অনবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই আর্থিকখাতে ব্যাপকভাবে সংস্কার করতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, অন্তবর্তীকালিন সরকার পুরো খাতে সংস্কার করবে বলে জানান অন্তবর্তঅকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া সাবেক ও বর্তমান এমডিদের অনেকে আইনের আওতায় আনা হতে পারে। সাবেক অনেক এমডিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানও চলছে বলে একটি সূত্রে জানা যায়।
অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিংখাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর গত জুন পর্যন্ত সময়ে বিতরণ করা ঋণের ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি হয়ে পড়েছে ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিতরণ করা ঋণের মধ্যে ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
আ. দৈ. /কাশেম/ রমজান