ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলেনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলে অপরাধীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, এজন্য যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার দ্রুত করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে কোন প্রচেষ্টায় আমরা সদা সর্বদা জনতার কাতারে ছিলাম, আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।
গতকাল শুক্রবার (৭ মার্চ ) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও সমাজের বিভিন্নস্তরের ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার মাহফিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর এসব কথা বলেন। সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলে অপরাধীদের বিচার না হলে মানুষের রক্তের দায় জাতিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তাড়া করবে।
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অসুস্থ্য রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রায় হয়েছে। যার সুযোগে দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো। আমরা আর আগের অবস্থায় যেতে চাই না। তাই সংস্কার অপরিহার্য। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বারংবার প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রতি জোড়ালো সমর্থন জানিয়ে আসছে। বিশেষ করে সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুদক ও বিচার বিভাগের সংস্কার জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে আগের তিমিরে ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। তাই এসব ক্ষেত্রে সংস্কার হতেই হবে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের নব্বইটিরও বেশি দেশে অনুসৃত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির পিআর নির্বাচন পদ্ধতি দাবি করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে এবং কার্যকর ও যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল পার্লামেন্ট গঠিত হবে। নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশি শক্তির ব্যবহার বন্ধ হবে। ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনহীন পরিস্থিতি দীর্ঘ হোক তা চায় না। বরং নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ করতে এবং নির্বাচনে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানাচ্ছে।
চরমোনাই পীর বলেন, ২০২৪ আমাদের ইতিহাসের একটি গৌরবময় ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন এই গৌরবের অংশ। আমরা জুলাইয়ের শুরু থেকেই রাজনৈতিকভাবে স্বনামেই এই আন্দোলনের অংশ ছিলাম। দীর্ঘ স্বৈরশাসনের পরে একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। এখন সময় হলো বাংলাদেশ গড়ার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সেই ১৯৮৭ সাল থেকেই বলে আসছে যে, আমাদের নিজস্ব ইতিহাস ও বোধ-বিশ্বাস সমর্থিত সংবিধান দরকার। কারণ বর্তমান সংবিধান নিজেই সমস্যাজনক। আজকের বাংলাদেশে আমাদের সেই ঐতিহাসিক দাবির পক্ষে ঐক্যমত তৈরি হয়েছে।
ইফতার মাহফিলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ ও সমাজের বিভিন্নস্তরের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আ. দৈ./ কাশেম