মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫,
২৮ শ্রাবণ ১৪৩২
ই-পেপার

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫
অর্থ-বাণিজ্য
দেশের চাহিদার অর্ধেকই বিদেশি পোশাক
চায়না পোশাকে সয়লাব দেশ
রমজান আলী
Publish: Friday, 17 January, 2025, 7:32 PM  (ভিজিট : 346)
কোলাজ: আজকের দৈনিক

কোলাজ: আজকের দৈনিক

পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। রপ্তানি আয়ে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৩ শতাংশ। এরপরও পুরো বাংলাদেশে চায়না পোশাকে সয়লাব। এর কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশীয় পোশাক শিল্পে।  

রাজধানীর অভিজাত শপিং মল ও রাজধানীর ফুটপাত ঘুরে দেখে যায়, দু-একটা দেশি ব্র্যান্ডের শো-রুম ছাড়া ক্রেতাদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে চায়না ও ভারতীয় বিখ্যাত ডিজাইনারের ডিজাইন করা পোশাক। শীতের মৌসুমে শিশু ও নারী এবং পুরুষের সব ধরনের পোশাকই চায়নার দখলে। শীতে চায়নার সবচেয়ে বেশি পছন্দের শীর্ষে রয়েছে জ্যাকেট ও সোয়েটার। এছাড়া রয়েছে মাফলার, গেঞ্জি, টুপি ও হাতের মোজা। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, পোশাক খাতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকার পরেও বিদেশি পোশাকে সয়লাব দেশ। এতে এক সময় দেশীয় শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে। বেশি মুনাফার লোভে যারা দেশীয় পোশাক রেখে চায়না পোশাক আমদানি করছে, তাদেরকে এখনই আইনের আওতায় আনা উচিত। তা না হলে সামনে দেশী শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। এতে একদিকে বেকারত্ব বাড়বে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক বড় ক্ষতি হবে। 

নারী, পুরুষ ও ছোটদের পোশাকের প্রায় পুরোটাই ভারত, পাকিস্তান, চীন আর থাইল্যান্ডের দখলে। বিক্রেতারা জানান, ক্রেতাদের বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের প্রতিই আকর্ষণ বেশি। নিত্য-নতুন ডিজাইন আর কাপড়ের মান উন্নত হওয়ায় চড়া দাম হলেও এসব পোশাকের প্রতি আগ্রহ ক্রেতাদের। যদিও দেশি উদ্যোক্তারা বলছেন, আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবেই মূলত বিদেশি পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা। আবার অনেকের রয়েছে দেশীয় পোশাকের প্রতিও সমান চাহিদা। তবে সেই চাহিদার তুলনায় দেশি পোশাকের নতুনত্ব ও বৈচিত্রের অভাব আছে। 

গতকাল মতিঝিল শাপলা চত্তর থেকে সুজন নামে এক ব্যক্তি চীনের সোয়েটার কিনছেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হলো, দেশে সোয়েটার থাকতে কেন চীনের পোশাক কিনলেন। প্রশ্নোত্তরে তিনি জানালেন, প্রথমত দাম কম। দেখতে খুব সুন্দর। এছাড়া পড়তেও আরামদায়ক।    

দেশীয় পোশাক উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশে উন্নতমানের পোশাক তৈরি হলেও কিছু অসাধু লোক বেশি ব্যবসা করার জন্য বিদেশী পোশাক বাজারে এনেছে। এতে দেশের শিল্পকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। এদিকে দেশীয় উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তবে অবৈধ পথে পোশাক আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন। সরকারের উচিত অবৈধ পথে পোশাক যাতে না আসতে পারে সেই দিকে নজর দিতে। তাহলে একদিকে ডলারের সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক চাঙা হবে। 

মতিঝিলের ফুটপাত শীতের জ্যাকেট নিয়ে বসেছেন আলিফ নামে একজন বিক্রেতা। তিনি জানান, এই শীতে চায়নার জ্যাকেট বেশি বিক্রি হয়েছে। কারণ চায়নার জ্যাকেট খুবই সুুন্দর ও দামেও সস্তা। এছাড়া ব্যবহার করা যায় বেশি দিন। ফলে ক্রেতারা বেশি পছন্দ করে চীনের পোশাক।    
 
বিটিএমএ থেকে বলা হচ্ছে, দেশের পোশাকের বাজারের ৪০ ভাগ দখল করে আছে বিদেশি কাপড়। বিদেশি কাপড় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে স্পিনিং মিলসহ শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধায় আনা শুল্কমুক্ত কাপড়-সুতাসহ অন্যান্য পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে মারাত্মকভাবে দেশীয় উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ববাজারের দ্বিতীয় পোশাক রপ্তানিকারক হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে স্থানীয় স্পিনিং মিলসহ প্রাইমারি খাতের কারখানাগুলো।

বিকেএমইএ'র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, চায়নার পোশাকে দেশীয় শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে

বিকেএমইএ'র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, চায়নার পোশাকে দেশীয় শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে

এছাড়া বর্তমানে গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে দামের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। আর সেই জায়গা দখল করে ভারত-চীনসহ বিদেশি কাপড়। শীতের উপলক্ষে চীনের পোশাকে থরে থরে সেজেছে ফুটপাত থেকে রাজধানীর অভিজাত শপিং মলগুলোতে।  

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীতের পোশাকের বাজারেও যেসব বিদেশী কাপড়ের পোশাক বেশি বিক্রি হয় তার মধ্যে চীনের পোশাকেরও রয়েছে আধিপত্য। মূলত চাকচিক্যময় ও নকশাদার হওয়ায় এগুলোর কদর বেশি। কোনও কোনও বিক্রেতা জানান, এসব পোশাকের ফেব্রিক্সও তুলনামূলক ভাল।
 
বিকেএমইএ এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের দৈনিককে বলেন, ‘বিদেশি পোশাকে বাংলাদেশ সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। এখন দেশীয় বাজারে চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি বিদেশ পোশাক দেখা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে দেশীয় শিল্পকারখানার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই পোশাকে দেশীয় বাজার টিকিয়ে রাখতে হলে মানুষের পছন্দের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে পোশাক তৈরি করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশী শিল্প বাঁচাতে হলে বিদেশি পোশাক আমদানি বন্ধ করতে হবে। আমদানি বন্ধ করতে না পারলে সামনে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে দেশীয় শিল্প। পরে বাধ্য হবে শিল্পকারখানা বন্ধ করতে। এতে দেশের বেকারত্ব বাড়বে। এছাড়া অর্থনৈতিক বড় ক্ষতি হবে।’


আ.দৈ/এআর

   বিষয়:  চায়না   বাংলাদেশ   বিদেশি পোশাক   চাহিদা   বিটিএমএ   বিকেএমইএ   
আপনার মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে ফেনসিডিলসহ ‘জুলাই যোদ্ধা’ আটক
মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল
মালয়েশিয়ানদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান ড. ইউনূসের
মানহানির অভিযোগে সারজিসের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার মামলা
সচিবালয়ে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধসহ ৭ নির্দেশনা জারি
আরো খবর ⇒

জনপ্রিয় সংবাদ

আটলা গ্রামের তরুণ যুবকদের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
পানির দাবিতে পল্লবীতে কালশী রাস্তা অবরোধ বিহারী ক্যাম্পবাসীর
নির্বাচনে অংশ নেওয়া ভুল হয়ে থাকলে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাই: চুন্নু
সংস্কার, বিচার ও জুলাই সনদে গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বললেন নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী
স্ত্রীকে মেরে ফেলেছি, আমাকে নিয়ে যান— ৯৯৯–এ স্বামীর ফোন
অর্থ-বাণিজ্য- এর আরো খবর
close
সম্পাদক ও প্রকাশক : কামরুজ্জামান সাঈদী সোহাগ
নির্বাহী সম্পাদক : তৌহিদুর রহমান

প্রকাশক কর্তৃক ১১/১/বি উত্তর কমলাপুর, মতিঝিল থেকে প্রকাশিত
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সাগুফতা ডি লরেল (তৃতীয় তলা), কমলাপুর বাজার রোড, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

মফস্বল সম্পাদক : ০১৭৭৫৮১৮২৭৫, ফোন : ০১৭১২-৫০১২৩৬, ০২-৫৮৩১৬১০৯ , ই-মেইল : ajkerdainik@gmail.com
About Us    Advertisement    Terms & Conditions    Privacy Policy    Copyright Policy    Circulation    Contact Us   
© ২০২৪ আজকের দৈনিক
🔝