গতকাল সোমবার (৬ জানুয়ারি) কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো লিবারেল পার্টির নেতা পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর পরই দলের নেতৃত্বের দৌড়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম উঠে এসেছে। বিবিসি জানিয়েছে, সাধারণ নির্বাচনের আগে এই পরিবর্তন দলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড
সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে শীর্ষ প্রতিযোগীদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। একসময় ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ফ্রিল্যান্ড গত ডিসেম্বরে আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেন। ৫৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূত এবং সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন।
তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে ট্রুডোর নেতৃত্বের প্রতি তার প্রকাশ্য সমালোচনা তাকে আলোচনার কেন্দ্রে রেখেছে।
মার্ক কার্নি
সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর বিশেষ উপদেষ্টা মার্ক কার্নি নেতৃত্বের দৌড়ে উল্লেখযোগ্য নাম। ৫৯ বছর বয়সী হার্ভার্ড গ্র্যাজুয়েট কার্নি অর্থনীতি এবং জলবায়ু নীতিতে বিশেষজ্ঞ।
তার ফেডারেল কার্বন ট্যাক্সের সমর্থন এবং পরিবেশ নীতির ওপর জোর দলের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার অভাব একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অনিতা আনন্দ
টরন্টোর এমপি এবং বর্তমান পরিবহনমন্ত্রী অনিতা আনন্দ উচ্চাভিলাষী নেতা হিসেবে চিহ্নিত। ৫৭ বছর বয়সী এই আইনজীবী কোভিড মহামারির সময় ভ্যাকসিন সংগ্রহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন ইউক্রেনের জন্য সহায়তা প্রদানে ভূমিকা রেখেছেন।
তার দক্ষতা এবং কর্মক্ষমতা নেতৃত্বের দৌড়ে তাকে একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী করে তুলেছে।
ফ্রাঙ্কোয়িস ফিলিপ শ্যাম্পেন
উদ্ভাবন, বিজ্ঞান এবং শিল্পমন্ত্রী ফ্রাঙ্কোয়িস-ফিলিপ শ্যাম্পেন কুইবেক থেকে নির্বাচিত একজন ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ।
তার রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা তাকে মধ্যপন্থী ভোটারদের আকর্ষণ করতে সহায়তা করতে পারে।
মেলানি জোলি
বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি ৪৫ বছর বয়সী এবং ফ্রাঙ্কোফোন সম্প্রদায়ে সুপরিচিত। তিনি আন্তর্জাতিক নীতিতে পারদর্শী এবং দলীয় নেতৃত্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।
তার আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও কূটনৈতিক দক্ষতা নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে।
ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক
অর্থ ও আন্তঃসরকার বিষয়ক মন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং দীর্ঘদিনের সংসদ সদস্য। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং দলীয় সংহতির পক্ষে কাজ করার ক্ষমতা তাকে শক্তিশালী প্রার্থী করে তুলেছে।
ক্রিস্টি ক্লার্ক
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টি ক্লার্ক নেতৃত্বের দৌড়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার তার অভিজ্ঞতা দলের নতুন পথচলায় ভূমিকা রাখতে পারে।
লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের দৌড় কানাডার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নেতা দলের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের পাশাপাশি আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নেবেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দলকে এগিয়ে নিতে পারে, তবে নির্বাচনী লড়াইয়ে চূড়ান্ত ফলাফলই তাদের সাফল্য নির্ধারণ করবে।
আ. দৈ/ আফরোজা