বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। লেখাপড়ায় সর্বপ্রথম নিজের ভাষা বা বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সারাদেশে এমন শিক্ষা কাঠামো তৈরি করতে হবে, যাতে একই ব্যবস্থার মধ্যে সর্বজনীন শিক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়। তাহলেই শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণ ও অধিকতর ন্যায়পরায়ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
গতকাল শনিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রাক্তন সভ্য সংঘ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণ ও অধিকতর ন্যায়পরায়ণ সমাজের পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রেহমান সোবহান বলেন, দেশের নেতারা বছরের পর বছর মাতৃভাষায় মানসম্মত শিক্ষার উন্নয়নে ভূমিকা রাখেননি, যা পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো করেছে। এর বিপরীততে দেশে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এমনটা করা যেতে পারে, যারা সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে চান, তাদের সন্তানদের বাধ্যতামূলকভাবে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করাতে হবে। সন্তানরা সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়লে এর মান বাড়ানোর চেষ্টা করবেন তারা। তবে এ প্রত্যাশা করা কল্পনা ছাড়া কিছু নয়।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, মেটলাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আলা আহমদ প্রমুখ।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষার গণতন্ত্রীকরণ ও অধিকতর ন্যায়পরায়ণ সমাজের পথরেখা তৈরি করতে গেলে শিশুদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একটা বই একটা শিশুর হৃদয়কে নাড়া দিতে পারে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা যদি শিশুর হৃদয়কে জাগ্রত করতে পারি, তাহলেই কাঙ্ক্ষিত সমাজ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব।
মাহফুজ আনাম বলেন, আমাদের ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব অনেক। নতুন শিক্ষার্থীদের হাত ধরে পরিবর্তনের সূচনা করার ব্যাপারে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
‘আলোকিত মানুষ চাই’ স্লোগান সামনে রেখে উচ্চ মূল্যবোধ সম্পন্ন, উদার, শক্তিমান ও সক্রিয় মানুষ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ৪৬ বছর ধরে কাজ করছে।
আ. দৈ/ আফরোজা