রংপুর নগরীতে এক স্কুলছাত্রকে পিস্তলের মতো বস্তু ঠেকিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রংপুর মহানগর সমন্বয় কমিটির এক সদস্যসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তি হলেন—রাগিব হাসনাইন (৩০) এবং রাকিবুল ইসলাম ওরফে তুষার (২৬)। গ্রেপ্তার রাকিবুল রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার ১ নম্বর আসামি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পার্কের মোড় এলাকায় কাওছার একাডেমির সামনে প্রেমজনিত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই স্কুলছাত্রের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠলে রাগিব ও তুষার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী জানান, এসময় রাকিবুল একটি পিস্তল সদৃশ বস্তু বের করে এক ছাত্রের মাথায় ঠেকান। এতে আশপাশের ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ঘিরে ফেলেন এবং গণধোলাইয়ের পর পুলিশে সোপর্দ করেন।
ঘটনার পর সোমবার রাতে থানায় গেলে দেখা যায়, এনসিপির মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলাল উদ্দিন কাদেরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা থানায় উপস্থিত হয়ে আটক দুজনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তারা ওসির কক্ষে গিয়ে তাদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেন বলেও জানা যায়।
এ সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এনসিপির রংপুর মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলাউদ্দিন কাদেরী দাবি করেন, গ্রেপ্তার রাগিব এনসিপির সদস্য এবং রাকিবুল তাদের সমর্থক। তিনি আরও বলেন, রাকিবুলের ভাগনেকে মারধর করা হয়েছে এমন খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে উত্তেজিত জনতা ‘খেলনা পিস্তল’ দেখে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ওসি শাহজাহান আলী বলেন, মারামারি এবং পিস্তল সদৃশ বস্তু দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত পিস্তল সদৃশ বস্তুটি ব্যালিস্টিক শাখায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষায় যদি এটি প্রকৃত আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা হবে।