স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর এক চাঞ্চল্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক যুবক। রাগ বা প্রতিশোধ না নিয়ে তিনি নিজেই স্ত্রীর বিয়ে দিয়েছেন তার প্রেমিকের সঙ্গে- আর সেই প্রেমিক কেউ নন, তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু!
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সাঁইথিয়ায়। জানা গেছে, বীরভূমের বাসিন্দা বাপি মণ্ডল পেশায় লরিচালক। কাজের কারণে বেশিরভাগ সময়ই তাকে থাকতে হয় বাইরে। এ সময় সংসারের খরচের টাকা পৌঁছে দিতেন তার বন্ধু জিৎ, যিনি একই পেশার। ধীরে ধীরে জিৎ ও বাপির স্ত্রী সঞ্চারী মণ্ডলের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
গত সোমবার (১০ নভেম্বর) সাঁইথিয়ার বাইপাস এলাকায় দুজনকে একসঙ্গে ঘুরতে দেখে বাপি তাদের ধরে নিয়ে যান স্থানীয় সতীপীঠ নন্দিকেশ্বরীতলায়। সেখানেই উপস্থিত লোকজনের সামনে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করেন।
বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই বাপির সিদ্ধান্তকে ‘অপ্রত্যাশিত হলেও সম্মানজনক’ বলে মন্তব্য করেন।
বাপি মণ্ডল বলেন, “আজ থেকে আমি মুক্ত। আমার স্ত্রী এখন আমার বন্ধুর স্ত্রী। ওর দায়িত্ব এখন থেকে বন্ধুর। আমি আমার ছেলেকে নিজের কাছেই রাখব।”
প্রায় নয় বছর আগে বাপির সঙ্গে সঞ্চারীর বিয়ে হয়েছিল। তবে বিবাহিত জীবনে কয়েক বছর পর থেকেই টানাপোড়েন শুরু হয়। সম্প্রতি সঞ্চারী স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন, যা এখনো বিচারাধীন। গত আট মাস ধরে তিনি বাবার বাড়িতে ছিলেন।
বাপি জানান, “অনেক দিন ধরেই জানতাম ওদের মধ্যে সম্পর্ক আছে। সমাজের ভয়ে কিছু বলিনি। কিন্তু এখন যেহেতু তারা একসঙ্গে থাকতে চায়, আমি তাতে বাধা দিইনি।”
অন্যদিকে, বিয়ের পর জিৎ বলেন, “আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা অনেক দিন ধরেই গভীর ছিল। বিয়ের ইচ্ছাও ছিল, কিন্তু বন্ধুকে বলতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত সব কিছু ঠিকভাবে হলো।”
বাপি আরও জানান, সাত বছরের ছেলেকে তিনি নিজের কাছেই রাখবেন এবং আশা করেন, সঞ্চারী সুখে থাকলে তার দায়ের করা মামলা তুলে নেবেন। তিনি বলেন, “যে থাকতে চায় না, তাকে জোর করে পাশে রাখার মানে নেই। এই সিদ্ধান্তে সবাই শান্তিতে থাকবে।”