বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকে আর কখনোই লাল-সবুজের জার্সিতে দেখা যাবে না- এমনটাই জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া মুঠোফোন সাক্ষাৎকারে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, “সাকিবকে বাংলাদেশের পতাকা বহনের সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। এবারের মতো বিষয়টি আমি পরিষ্কারভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে জানাবো সাকিব আল হাসান আর কখনোই জাতীয় দলে ফিরতে পারবে না।”
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে একটি ফেসবুক পোস্টে শুভেচ্ছা জানান সাকিব আল হাসান। এই পোস্ট ঘিরেই শুরু হয় সমালোচনা, বিতর্ক এবং রাজনৈতিক আলোড়ন। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এই মন্তব্য এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আসিফ বলেন, “যখনই তিনি দেশে আসতে চেয়েছেন বা খেলতে চেয়েছেন, তিনি আমাকে বলতেন যে রাজনীতিতে তার কোনো আগ্রহ নেই, নমিনেশন জোর করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। সেজন্যই তার আর জাতীয় দলে খেলার সুযোগ থাকার প্রশ্নই আসে না।”
অন্যদিকে, সাকিব আল হাসান তার অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছেন, তার পোস্টটি ছিল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা জানানো। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা খেলা নিয়মিত দেখতেন, ক্রিকেটের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য বা ইঙ্গিত ছিল না।”
প্রসঙ্গত, সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বিতর্কিত অভিযোগ উঠেছে শেয়ার কেলেঙ্কারি, ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ, এমনকি একটি হত্যা মামলার সঙ্গেও তার নাম জড়িয়েছে। তবে সেসব মামলার বেশিরভাগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল কি না তা নিয়ে জনমত বিভক্ত।
বর্তমানে গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে সাকিব বিদেশেই অবস্থান করছেন এবং দেশে ফিরতে পারেননি। নতুন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টার কঠোর অবস্থানের ফলে এবার হয়তো তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পথ চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।