জাতীয় পার্টি কোন অন্যায় করেনি, তাহলে কেন জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের কথা বলে জামায়াত?এটা খুবই দুঃখজনক। নির্বাচন পেছাতেই জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চায়। এমনকী দেশ এখন জামায়াত চালাচ্ছে, তাই নির্বাচন পেছালে তারা নিজেদের আরো শক্তিশালী করতে পারবে।
এই সরকার মূলত জামায়াত—এনসিপির বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি একটি টক শোতে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। প্রতিপক্ষকে নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্র বলে নয় উল্লেখ করে শামীম পাটোয়ারী বলেন, গণতন্ত্র মানে তো এই নই যে সাতটি দল মিলে দুটি দল ব্যান করে দেবে।
ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, যখনই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠলো তখন জামায়াত কিছু বলেনি। যদিও জামায়াতের প্রচণ্ড সমর্থন থাকতে পারে, এটা দুঃখজনক যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সময় জামায়াত কিছু বলেনি। কিন্তু জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের সময় জামায়াত স্পষ্ট কথা বলছে। এটা ঠিক নই।
জামায়াতের জীবনের প্রথম ভোট স্বাধীন বাংলাদেশে এরশাদ স্যারের আমলে ১৯৮৬ সালে জামায়াত পার্টিসিপেট করে এবং জাতীয় পার্টি কখনো জামায়াতের ব্যানের পক্ষে তো বলেইনি, বিপক্ষেই বলেছে। জিএম কাদেরও স্পষ্ট বলেছে। এই কিছুদিন আগেও গত বছর যখন জামায়াত ব্যান করা হলো শেখ হাসিনার আমলের শেষের দিকে, জিএম কাদের স্পষ্ট বলেছে এভাবে কোনো দল ব্যান করা যায় না।’
ভোটের আসনগুলো ভাগাভাগি করে নেবে। গণতন্ত্র মানে তো হচ্ছে আপনি নির্বাচন করবেন। নির্বাচনে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচনের আগেই যদি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আপনি রূপরেখা তৈরি করতে চান তাহলে কিন্তু এটা এক ধরনের বড় মাপের স্বৈরাচারী আচরণ এবং এটাই বাংলাদেশে সবসময় প্রবলেম ছিল। ১৪, ১৮, ২৪ ওই ধরনের নির্বাচন ছিল যেটা আগে থেকেই ফলাফল নির্ধারণ ছিল।
সেটার বিরুদ্ধেই তো মানুষ জেগে উঠলো। মানুষ সেটার প্রতিবাদ করল, তারা পালিয়ে গেল। নতুন রিজিম আসলো। এখন নতুন ধারায় যারা এসে তাদের একাংশ যদি আবার সেই নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, জাতীয় পার্টি বাদ, আওয়ামী লীগ বাদ, জাসদ বাদ, আরো অনেকে বাদ, তাহলে ভোট হবে কিভাবে?
অন্তর্বর্তী সরকার জামায়াত—এনসিপির উল্লেখ করে শামীম বলেন, আমি মনে করি জামায়াত এই মুহূর্তে ৫৫ বা ৫৪ বছরে স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে এবং সবচেয়ে রেসপন্সিবল এটিচিউডটা তাদেরকে করতে হবে। শক্তিশালী অবস্থান মানে এই না যে আমি আরেকটি দলকে ব্যান করে আমার পলিটিক্যাল সুবিধা করে নেব। আর শক্তি জানান রাজপথে দিতে পারে। সরকারটাই তো তাদের। এই সরকার জামায়াতের সরকার, এই সরকার এনসিপির সরকার। নিজের সরকারের বিরুদ্ধে কেউ আন্দোলন করে নাকি? সরকার যদি ব্যান করার প্রয়োজন মনে করতো, তাহলে ব্যান করতো। আমার মনে হয় তাদের শক্তি প্রয়োগ বিএনপিকে চাপে ফেলানো, বিএনপিকে কোনো কিছুতে বাধ্য করার চেষ্টা করা। পুরো জিনিসটাই ঘোলাটে এবং ইলেকশনকে পিছিয়ে দেওয়া সবচেয়ে বড় হচ্ছে এই মুহূর্তে দেশের যে কাঠামো সেখানে জামায়াত খুবই কমফর্টেবল। ভিসি তাদের ডিসি তাদের, ছাত্র সংসদে তাদের ভোট ভালো হচ্ছে। দেশ চালাতে জামায়াতের কোন অসুবিধা হচ্ছে না। সুকৌশলে তারা চাঁদাবাজি বা অন্য বিষয় থেকে নিজেদেরকে দূরেও রাখতে পেরেছে। তো এই মুহূর্তে যত ভোট দেরি হবে জামায়াত তত তার গ্রিপটাকে স্ট্রং করতে পারবে। তো অমুক দল ব্যান করে দাও, পিআর আনো— এগুলো করে ভোটটাকে নষ্ট করে দেওয়া ও ভোট পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
আ.দৈ/ওফা