জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের ১৩ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন এনডিএম-এর দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি। পরে মামলার এজাহার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তা গ্রহণ করে আগামী ৯ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। পাশাপাশি আসামি করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহিবুল আলম চৌধুরী ও মোহাম্মাদ এ আরাফাত। এছাড়া রয়েছে ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মাদ সাইফুল আলম মাসুদ এবং ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতাকর্মীর নামও। তারা হলেন- সিদ্দিকী নাজমুল আলম, মোস্তফা আল নাফিজ, মো. নূর, রিয়াজ মাহমুদ, সাগর আহমেদ এবং আওয়ামী লীগ কর্মী শামীম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই ববি হাজ্জাজ ও অন্যান্য সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের 'প্রতিহত' করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। ববি হাজ্জাজের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনাও সেই ধারাবাহিক অংশ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে শেখ পরিবারের সংশ্লিষ্টতার তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট, এবং গণমাধ্যমে সরব ভূমিকা এসব কারণে তাকে ‘টার্গেট’ করা হয়।
বাদী জানান, ২০২৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাতে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের গুলশানের বাসায় প্রবেশ করে দুই ব্যক্তি—মোস্তফা আল নাফিজ ও মো. নূর। সন্দেহজনক আচরণে নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটক করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. নূর স্বীকার করেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে ববি হাজ্জাজকে হত্যার জন্য তারা এসেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এই পরিকল্পনায় অর্থায়ন করেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ এবং পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মহিবুল আলম চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, এ আরাফাত এবং ছাত্রলীগের নেতারা।
সিদ্দিকী নাজমুল আলম ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ্যে ববি হাজ্জাজকে ‘শায়েস্তা’ করার হুমকি দিয়েছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনা ও মহিবুল আলম চৌধুরী সামাজিক মাধ্যমে ববি হাজ্জাজকে উদ্দেশ্য করে বিষোদগার করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
আদালত মামলার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। গুলশান থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।