‘‘আমি যেই মাপের লোক আমারে সেই মাপের একটা অস্ত্র দিয়ে পাশাইতি (ফাঁসাইতি), যেমন বিদেশি পিস্তল, শটগান বা অন্যান্য অস্ত্র দিয়া পাশাইতি। বুড়া অস্ত্র দিয়া আমার মানসম্মান শেষ করলি।’’
এক নলা বন্দুকসহ গ্রেপ্তারের পর কারাগারে থাকা যুবদল নেতা একেএম ফরিদ উদ্দিনের এমন একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নানাবিধ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার (১৮ আগস্ট) আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দেওয়া হয়। কারাগারে বসে তিনি কীভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন এ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। স্ট্যাটাসটি পরে একবার সংশোধন করা হয়েছে। স্ট্যাটাস দেওয়ার এক ঘণ্টা পর ওই নেতার মুক্তির দাবিতে পালেরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের একটি ভিডিও লিংকও শেয়ার করা হয়েছে ওই আইডি থেকে।
আলোচিত ওই স্ট্যাটাস সবাইকে শেয়ার করার আহ্বান জানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘‘... তোকে বলছি, যেহেতু আমার বাড়িতে বাংলা অস্ত্র রাখি সেনাবাহিনীকে খবর দিয়া আমারে পাশাইলি (ফাঁসাইলি)। তাতে আমি অনুতপ্ত নয়। আমি জেলা যুবদলের নেতা ছিলাম আমি একজন ঠিকাদার ও প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী। যেহেতু আমারে অস্ত্র দিয়ে পাশাইলি (ফাঁসাইলি), তাহলে আমি যেই মাপের লোক আমারে সেই মাপের একটা অস্ত্র দিয়ে পাশাইতি। যেমন বিদেশি পিস্তল, শটগান বা অন্যান্য অস্ত্র দিয়া পাশাইতি। আমার দুঃখ লেদ মিশেনে (মেশিন) বানানো এয়ারগানের পাইপ দিয়া কাঠের বাট লাগানো নতুন রং করানো ২ হাজার টাকার অস্ত্র দিয়া আমারে পাশাইলি। এটার জন্য আমি লজ্জিত। এই বুড়া অস্ত্র দিয়া আমার মানসম্মান শেষ করলি।’’
লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) নুর মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘‘কারাগারে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। অস্ত্র মামলায় ফরিদ রিমান্ডে ছিলেন। গত রবিবার তাকে রিমান্ডে নেয় সদর থানা পুলিশ। সেখান থেকে আদালতের মাধ্যমে রাত ৯টার দিকে তাকে কারাগারে আনা হয়েছে। তিনি স্ট্যাটাস দিয়ে থাকলে বাহির থেকে দিয়েছেন।’’
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘‘ফরিদ একদিনের রিমান্ডে ছিলেন। দুপুর ১২টার পর তাকে হাজতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে ও হাজতে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। হয়তো পরিবারের লোকজনই স্ট্যাটাস দিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, ১০ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নের পালেরহাট এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার বাড়ি থেকে একনলা একটি বন্দুক ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর তার সহযোগী নাঈমের বাড়ির পুকুরের পাশ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনার পর প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে ফরিদ উদ্দিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল।